যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাশিয়ার কোনো সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কের পুরোপুরি ইতি ঘটবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকার বিষয়ক প্রধান আলেকজান্ডার দারচিভ শনিবার এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটনের যদি এ ধরনের কোনো হীন মানসিকতা থেকে থাকে তাহলে তা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দেবে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক রুশ সম্পদের যে কোনো সম্ভাব্য জব্দের ঘটনা আমাদের মধ্যে যতটুকু সম্পর্কের অস্তিত্ব রয়েছে তাও শেষ করে দেবে। রুশ সংবাদমাধ্যম তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
দারচিভ বলেন, ‘আমরা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মার্কিনীদের সতর্ক করছি। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্হায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আর সেটি ওয়াশিংটন কিংবা মস্কো কারো স্বার্থের অনুকূলে যাবে না।’ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রাশিয়ার ঠিক কোন সম্পদ জব্দ হওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন সেটি অবশ্য তাত্ক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করেননি রুশ পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা। তবে তিনি ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার সমালোচনা করেছেন। আলেকজান্ডার দারচিভ বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর মার্কিন প্রভাব এমন মাত্রায় বেড়েছে যে, আমেরিকানরা ক্রমবর্ধমান সংঘাতে সরাসরি পক্ষ হয়ে উঠছে।’ এর কয়দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে আর রুশ পরমাণবিক অস্ত্রসম্ভার পরিদর্শনের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল মস্কো। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ সংক্রান্ত চুক্তিতে ‘বিশেষ পরিস্হিতি’ উল্লেখ করে যে শর্ত রাখা হয়েছিল সেটি ব্যবহার করেই এই চুক্তি তারা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।
মূলত ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক একদম তলানিতে গিয়ে পৌছেছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় এই সম্পর্কের অধঃপতন ঘটে। বিশেষ করে কিয়েভে হাজার হাজার রুশ সৈন্য মোতায়েনে যুক্তরাষ্ট্র বিপরীতমুখী অবস্থান নেয় এবং ইউক্রেনকে অস্ত্র ও আর্থিক সাহায্য করতে থাকে। এতে করে বিশ্বব্যবস্থা সেই স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার অবস্থানে মোড় নেয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায়। এরপর থেকেই রাশিয়া-ইউক্রেন পুরোদমে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এর প্রতিক্রিয়ায় নজিরবিহীনভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তি কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অবরোধ দেয়। এতে করে রাশিয়ার স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আঘাত করে। যদিও পশ্চিমা শক্তির এসবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাশিয়া এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে। প্রতিদিনই বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন মারাত্মক নাভিশ্বাস জন্ম নিয়েছে।