শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘প্রিন্সিপালের পা ধরে ক্ষমা চেয়েছিল অরিত্রী’

আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:০৬

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌসের কাছে ক্ষমা চেয়েছিল অরিত্রী অধিকারী (১৫)। তারপরেও তাকে টিসি নিয়ে আসতে বলা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রীর পরিবার এই অভিযোগ করে।

সোমবার রাজধানীর শান্তিনগরে ৭ তলা ভবনের সপ্তম তলার একটি ফ্ল্যাটে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় অরিত্রী অধিকারীকে। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। ওই ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে।

অরিত্রীর মা-বাবা জানান, তাদের মেয়ের স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রবিবার চলছিল সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা। পরীক্ষার সময় তার কাছে একটি মোবাইল পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ অরিত্রীর মা-বাবাকে ডেকে পাঠায়। স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, অরিত্রী মোবাইলে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন: শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা: ভিকারুননিসার প্রভাতী শাখা প্রধান বরখাস্ত

অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী বলেন, সোমবার পরীক্ষার সময় অরিত্রীর সঙ্গে তারা স্কুলে যান। তারা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করেন। এসময় মেয়ের টিসি নিয়ে যেতে বলা হয়।

অরিত্রীর বাবা আরো বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন। সেখানে গিয়ে তারা ক্ষমা চান। তার মেয়ে প্রিন্সিপালের পা ধরে ক্ষমা চাইলেও তাদের বেরিয়ে যেতে বলেন এবং পরের দিন টিসি নিয়ে আসতে বলেন।

দিলীপ অধিকারী বলেন, এ সময় অরিত্রী দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে তিনি স্ত্রীসহ বাড়ি গিয়ে দেখেন, অরিত্রী তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে।

বাবা-মা ও ছোট বোনের সঙ্গে অরিত্রী। ছবি: ইন্টারনেট

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, ওই ছাত্রী পরীক্ষার হলে মোবাইলে নকল দেখে পরীক্ষা দিচ্ছিল। মোবাইল ফোনে পুরো বই কপি করা ছিল। বিষয়টি পরিদর্শক শিক্ষক বুঝতে পেরে খাতা নিয়ে নেন।

এদিকে ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মঙ্গলবার সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের পরিচালক মো. ইউসুফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।

অন্যদিকে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ। তাদের গঠিত কমিটির নেতৃত্ব দেবেন স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. আতাউর রহমান। এই কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- অভিভাবক প্রতিনিধি তিন্না খুরশীদ জাহান ও শিক্ষক ফেরদৌসী বেগম। আগামী তিন দিনের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অরিত্রী। ছবি: ইন্টারনেট

ইত্তেফাক/জেডএইচ