শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভাসুবিহারে পাওয়া গেল ১৩শ বছর আগের সভ্যতার নিদর্শন

আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:২১

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় বৌদ্ধবিহার নামে পরিচিত ভাসুবিহারে প্রত্নতাত্বিক খননে বেরিয়ে এসেছে এক হাজার ৩শ বছর আগের প্রাচীন নিদর্শন। সেখানে চারটি স্তুপার সন্ধান পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিলুপ্ত সভ্যতার মূর্তি ও পোড়ামাটির ফলকসহ অন্য সামগ্রী।
 
প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের উদ্যোগে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ভাসুবিহারে প্রত্নতাত্বিক খনন চলছে। আগামী মাসের মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত এই খনন চলবে। প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানার নেতৃত্বে ভাসুবিহারে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল এই খননকাজ পরিচালনা করছেন।

প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমানকে এই খনন টিমের প্রধান করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন, সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির সহকারী কাস্টডিয়ান মোহাম্মদ যায়েদ, মহাস্থানগড় যাদুঘরের সহকারী কাষ্টডিয়ান এস এম হাসনাত বিন ইসলাম, বগুড়ার আঞ্চলিক প্রত্নতত্ব কার্যালয়ের ড্রাফটসম্যান আফজাল হোসেন, সার্ভেয়ার মো: লোকমান, আলোকচিত্রী আবুল কালাম আজাদ। 

বগুড়ার ঐতিহাসিক পুন্ড্রনগর খ্যাত মহাস্থানগড় থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে এই ভাসুবিহার অবস্থিত। এখানে প্রথম খনন কাজ কাজ শুরু করা হয় ১৯৭৩ সালে। স্থানীয় লোকজনের কাছে এক সময় এই ভাসুবিহার পরিচিত ছিল নরপতির ধাপ নামে। খননকাজের পর প্রত্নতত্ববিদরা এর নাম দেন ভাসুবিহার। সে সময় খননে পাশাপাশি দুটি বৌদ্ধবিহার এবং উত্তরমুখী একটি বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায়। সেসব সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। ১৯৭৩ সালের পরও ভাসুবিহারে খনন করা হয়েছে। 

প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মো: মুজিবুর রহমান বলেন, ১৪ অক্টোবর থেকে ভাসুবিহার সংরক্ষিত এলাকায় এই খনন শুরু হয়। মাটির বর্তমান স্তরের কয়েক ফুট নিচ পর্যন্ত খনন করা হয়। এবারের খননে ইটের তৈরি চারটি স্তুপা পাওয়া গেছে। এর মেধ্যে তিনটি মোটামুটি ভাল রয়েছে। অন্যটি ধ্বংস অবস্থায় রয়েছে। প্রাচীন বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের স্মরণে এই স্তুপাগুলো নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়। এ ছাড়া আরও একটি ৩ দশমিক ১০ মিটার ব্যাসের গোলাকার নির্দশন পাওয়া গেছে। কিন্তু এই নিদর্শন সম্পর্র্কে কোন ধারণা পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, এর আগে চারবারের খননে মাঝারি আকারের বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ ছাড়াও পাওয়া গেছে অনেক প্রত্নদ্রব্যাদি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬০টির বেশি ব্রোঞ্জনির্মিত মূর্তি উৎকীর্ন লিপিযুক্ত ১০০টির বেশি পোড়ামাটি ও রোদের তাপে শুকানো সিলমোহর, ৩৭টি পোড়া মাটির ফলকচিত্র, বহু অলংকৃত ইট, কয়েকটি প্রস্তর গুটিকা ও বেশ কিছু মাটির পাত্র। আগামীতেও এখন খনন কাজ করা হবে বলে তিনি জানান।

ইত্তেফাক/নূহু