বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১০

আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৪১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেওয়া ও কথাকাটাকাটির জেরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। পরে দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সুমনা ক্লিনিক এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে  প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, বুধবার রাতে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের গ্রুপের কর্মীরা সভাপতি তরিকুল ইসলামের ছবি ক্রপ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়। এরপর সভাপতি গ্রুপের কর্মীরাও এর বিপক্ষে ফেসবুকে পোস্ট ও কমেন্টে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। 

এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য চত্বরে এলে সাধারণ সম্পাদকের কর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।

এ সময় সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের কর্মী উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের সালমান এফ রহমান, সৈয়দ অভি, গণিত বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্ত, পরিসংখ্যান বিভাগের অর্পন সান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীরসহ কয়েকজন একসঙ্গে সভাপতি গ্রুপের কর্মী সিএসই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার শাকিল, রনি ও জিয়াদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়।

এরপর সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকলে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সভাপতি গ্রুপের কর্মী পরিসংখ্যান বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মিনুন মাহফুজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বারেক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোভন, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরুল ইসলাম উম্মের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সাধারণ সম্পাদকের কর্মীদের উপর হামলা করে।

এ সময় সাধারণ সম্পাদেকর গ্রুপের কর্মী সাজ্জাদ হোসেন এহসান, এ কে এম পারভেজ, নূরে আলম, নিয়াজ হৃদয় সভাপতি গ্রুপের কর্মী সোহান, নাহিদ, নাফিজ কয়েকজনকে মারাত্মকভাবে আহত হয়। এই ঘটনার পর দুপুর ১২টার দিকে সাধারণ সম্পাদকের কিছু কর্মী শহীদ মিনারের পাশে অবস্থান নিলে সভাপতি গ্রুপের কর্মীদের সঙ্গে আবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন শিক্ষক তাদের থামাতে গেলে তারাও ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়। এ সময় দুইদিকে দুই গ্রুপে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। এ সময় দুই গ্রুপের কর্মীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, ছুরি, রড, লাঠিসোটা দেখা গেছে।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় যারা জড়িত তারা ছাত্রলীগের কেউ না, এরা অধিকাংশ অপরিচিত। ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা এ ধরণের সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল বলেন, ‘গত বছর একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা  এলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ বছরও এই সময়ে ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষেও শিক্ষার্থীরা এলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরা আসলে ছাত্রলীগের কেউ না। জাতীয় নির্বাচনের সময় এদের আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান ছিল না।  এরা মূলত ক্যাম্পাসকে বারবার অস্থিতিশীল করার লক্ষে সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

আরও পড়ুনঃ আশুলিয়ায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ৩০

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘উভয় পক্ষের মাঝে ভুল বোঝাবুঝির কারণে একটু সংঘর্ষ হয়েছে। আবার উভয় পক্ষ ভুল বুঝতে পেরে মীমাংসা হয়ে গেছে। এখন ক্যাম্পাস পুরোপুরি শান্ত।’

ইত্তেফাক/নূহু