বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পুনঃনির্বাচনের দাবি জানালেন ডাকসু ভিপি নুর

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০১৯, ২০:৩২

নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে উল্লেখ করে আবারও নির্বাচনের দাবি জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। পুনঃনির্বাচন ইস্যুতে এর আগেও বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন তিনি। 

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। এদিকে পাঁচ দফা দাবিতে আগামীকাল সোমবার ক্লাস বর্জন ও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলো। একই স্থানে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা। নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলোর পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্বতন্ত্র জোট থেকে ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান।

নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর যে নির্বাচন হয়েছে তার মাধ্যমে প্রশাসন ডাকসুতে কালিমা লেপে দিয়েছে। আমরা বলেছি, পুনঃনির্বাচন দিতে হবে এবং যারা এই নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। 

তিনি বলেন, আমরা কোন কলঙ্কিত নির্বাচন চাই না। স্বচ্ছ নির্বাচন চাই। যেখানে স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে সকল ছাত্রের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। কিন্তু আমরা সে ধরনের কোন ফলাফল দেখি নাই। শিক্ষকরাই এই নির্বাচনের কারচুপির সঙ্গে জড়িত। তাই, আমি পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, গত ১১ মার্চ বহুল প্রতিক্ষিত যে ডাকসুর নির্বাচন হয়েছে তাতে সাধারণ ছাত্রদের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলিত হয়নি। নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল, সেই সংকট থেকে উত্তরণের একটি মাধ্যম হিসাবে ডাকসু নির্বাচনকে রোল মডেল হিসাবে উপস্থাপন করা যেত। কিন্তু এ নির্বাচনে মৈত্রী হলে ক্রস দেওয়া ব্যালট, রোকেয়া হলে ট্রাঙ্ক ভর্তি ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন হলে কৃত্রিম লাইন, সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে ডুকতে না দেওয়াসহ নানাবিধ  সমস্যা হয়েছে। নিরপেক্ষ শিক্ষদের দিয়ে নির্বাচন না দেওয়া, প্রার্থীদের ওপর হামলা পর্যন্ত হয়েছে যা একটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যথেষ্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের ধারাকে অক্ষুণ্ন রাখতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সম্মানকে অক্ষুণ্ন রাখতে এই নির্বাচনকে প্রশ্নের উর্ধ্বে রেখে শিক্ষার্থীদের মতামতের দাবির আলোকে এই বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল করে ফের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার দাবি জানানো হয় এ সময়।

আরও পড়ুন: ভারতে পোশাক রফতানি বাড়ানোর সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এদিকে পাঁচ দফা দাবিতে আজ সোমবার ক্লাস বর্জন ও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বলে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলো। তাদের দাবিগুলো হলো- ডাকসু নির্বাচন বাতিল, পুনঃতফসিল দেওয়া, উপাচার্যের পদত্যাগ, মামলা প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের বিচার।  কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্বতন্ত্র জোট থেকে ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান।

এর আগে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে রবিবার দুপুর ১টায় মধুর ক্যান্টিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নির্বাচন হয়েছে, সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। আমরা ১১মার্চ নির্বাচনের দিন ৫টি প্যানেল যৌথভাবে এই নির্বাচনকে বর্জন করেছিলাম এবং একইসঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু গতকালের (শনিবার) নুরুর বক্তব্য সবাইকে হতাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের প্যানেল ছাড়া বাকি প্যানেলগুলো উপস্থিত ছিল না।

ইত্তেফাক/এমআই