চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসের একটি কটেজ থেকে জাহাঙ্গীর ইসলাম রাজু নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃষ্পতিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী হলের পাশে অবস্থিত এতিম আলী কটেজের একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে হাটহাজারি থানা পুলিশ। রাজু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তার বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরী উপজেলায়। সে লেবানন প্রবাসী মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
হাটহাজারি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অং শাং খীসার উপস্থিতিতে তার মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, একজন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ চমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আলামত দেখে প্রাথমিক ধারণায় মনে হচ্ছে রাজু আত্মহত্যা করেছে। তবে ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র জানান, ‘রাজুর পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে রাজুর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।’
রাজুর সহপাঠীরা জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারির দিকে রাজু ভাড়া নেয় ওই কটেজ। কটেজের ওই কক্ষে একাই থাকতো রাজু। চাকরি এবং পড়াশোনা নিয়ে খুব বেশি চিন্তায় ছিলো রাজু। চাপা স্বভাবের বলে খুব বেশি কথাও বলতো না সহপাঠীদের সঙ্গে।
কটেজের অন্য শিক্ষার্থীরা জানায়, বুধবার বিকেল থেকে মুঠোফোনে বারবার কল করার পরেও ফোন রিসিভ না করলে রাজুর পাশের কটেজের এক শিক্ষার্থীকে জানায় তার ছোট ভাই। পরবর্তীতে ডাকাডাকির পরেও ভেতর থেকে কোন সাড়াশব্দ না পেলে জানালার ফাঁক দিয়ে রাজুর মরদেহ দেখতে পায় তারা।
এ প্রসঙ্গে প্রথমে মরদেহ দেখতে পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন জানান, 'দুই দিন আগে তার সঙ্গে সামনা-সামনি কথা হয়েছিল। তাকে সে সময় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে হয়েছে। সবসময় পড়াশোনা ও চাকরি নিয়ে চিন্তায় থাকতো। সকালে রাজুর বাড়ি থেকে তার ভাই ফোন করে যোগাযোগ করতে পারছে না বলে জানান। অনেক ডাকাডাকির পরেও রাজুর সাড়াশব্দ না পেলে আমরা জানালার ফাঁক দিয়ে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই।'
আরও পড়ুনঃ চান্দিনায় সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
রাজুর সাবেক রুমমেট মো. আজিম বলেন, ‘গত ৩০ নভেম্বর আমি চট্টগ্রাম শহরে বাসা নিই। রাজুর সঙ্গে থাকার সময় দেখতাম মানসিকভাবে সবসময় হতাশাগ্রস্ত ছিলো সে। বিভিন্ন সময় পত্রিকায় আত্মহত্যার কলাম দেথে আমাকে দেখাতো এবং বলতো দিন দিন আত্মহত্যা বেড়েই চলছে। বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আজ সেই আত্মহত্যা করবে- বিশ্বাস করতে পারছি না!'
ইত্তেফাক/নূহু