শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বগুড়া-৩ : দেবর-ভাবির নির্বাচনী খেলা শেষ

আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ২০:০৩

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিএনপির প্রার্থী শূন্য হয়ে পড়েছে। এই আসনের ধানের শীষের বা ঐক্যফ্রন্টের কোন প্রার্থী নেই। পারিবারিক কোন্দলে দেবর-ভাবী খেলায় খেলতে গিয়ে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে পরিবারের নিকট আত্মীয়রা মনে করছেন। তাদের মধ্যে জেদাজেদির কারণেই এই অবস্থা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া-৩ আসনে বিএনপি থেকে মোট ১২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন আবদুল মোমিন তালুকদার, তার স্ত্রী মাসুদা মোমিন ও ছোট ভাই আবদুল মোহিত তালুকদার ছিলেন। পরে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক সাংসদ আবদুল মোমিন ওরফে খোকা তালুকদারের স্ত্রী মাসুদা মোমিনকে। পরে ৮ ডিসেম্বর রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত দলীয় চিঠিতে প্রার্থী পরিবর্তন করে মাসুদা মোমিনের পরিবর্তে তার দেবর আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মহিত তালুকদারকে প্রার্থী করেন।

বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লেখা ওই চিঠিতে মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, এ আসনে মাসুদা মোমিনের মনোনয়ন বাতিল করে আবদুল মোহিত তালুকদারকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার জন্য জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রথমে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পরে ইসি আবদুল মোহিত তালুকদারের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করলে তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট রবিবার তার মনোনয়নপত্র গ্রহণের পক্ষে রায় দেন। নির্বাচন করতে কোনো বাধা না থাকায় মাসুদা মোমিনের মনোনয়ন বাতিল করে আবদুল মোহিত তালুকদারকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। 

এদিকে সোমবার আপিল বিভাগের আদেশে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বগুড়া-৩ আসনের আবদুল মোহিত তালুকদার নির্বাচনে অংশগ্রহণ আটকে গেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রশ্ন এ আসনে এখন কাকে বিএনপি সমর্থন দেবে, তাই দেখার বিষয়। 

এর আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে থেকে নির্বাচন করার প্রেক্ষাপটে রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের পৃথক বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছিলেন। বগুড়া-৩ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোহিত তালুকদার হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে ইসিকে নির্দেশ দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে ইসি আবেদন করে আপিল বিভাগে। শুনানি নিয়ে ১১ ডিসেম্বর চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ চেম্বার বিচারপতির দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন।

এ ব্যাপারে আব্দুল মোহিত তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন যে, তিনি নির্বাচন করতে পারছেন না। দলীয় কি সিদ্ধান্ত হয় তার উপর সব কিছু নির্ভর করছে।

আরো পড়ুন: সংবিধান পরিবর্তন করতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সিরিয়া

ইত্তেফাক/জেডএইচ