শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভয়-ভীতিতেও দমানো যায়নি ছাত্রদের

আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৪:০০

১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বাঙালি যেন নিজের রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়েছিল। অগ্নি ঝরানো আন্দোলন গড়ে তুলবার প্রতীক্ষায় ছিল পুরো জাতি। সারাদেশে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরদিন প্রতিবাদের রূপ কী হয় এ নিয়ে একটা তুমুল আলোড়ন চলছিল মানুষের মনে। আর ছাত্ররা যারা এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন তারা ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আজকের এই শোভিত শহীদ মিনার দেখে ১৯৫২ সালের এই দিনটির কথা উপলব্ধি করা যাবে না।

সেদিন ছাত্রদের আন্দোলনের প্রস্তুতির তীব্রতা ও অনমনীয় ভাব দেখে পূর্ববঙ্গ সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে একমাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করে দেন। সরকারি এক নির্দেশে বলা হয়, ‘ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করিয়া একমাসের জন্য ঢাকা শহরে সভা, শোভাযাত্রা প্রভৃতি নিষিদ্ধ করিয়াছেন। আদেশ জারির কারণ সম্পর্কে বলা হয়, একদল লোক শহরে সভা, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রয়াস পাওয়ায় এবং তদ্বারা জনসাধারণের শান্তি ও নিরাপত্তা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকায় এই ব্যবস্থা অবলম্বিত হইয়াছে। কোতয়ালী, সুত্রাপুর, লালবাগ, রমনা ও তেজগাঁও থানার অন্তর্গত সমুদয় এলাকায় ইহা প্রবর্তিত হইয়াছে।’ মূলত জনমনে ভীতি ও ত্রাস সঞ্চারের চিরাচরিত পন্থাই সরকার গ্রহণ করেছিল। তবে এসব ভয়-ভীতিতেও দমানো যায়নি ছাত্রদের।

সরকারের ১৪৪ ধারা প্রবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ এর কর্মসূচি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কর্মপরিষদের যে বৈঠক হয় সেখানে ১১-৪ ভোটে ১৪৪ ধারা না ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। তবে ছাত্ররা বিশেষ করে অলি আহাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ এর বিরোধিতা করে। অলি আহাদ বলেছিলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। আগামীকাল (২১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় যে ছাত্র সভা হবে তাতে ১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষে যদি রায় হয় তবে আমরা ভাঙার পক্ষে।’

আরও পড়ুন: অপরিনত বয়সের ২২ শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধার

এ প্রসঙ্গে গাজীউল হক বলেন, অলি আহাদ, মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি গোলাম মওলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মতিন এরা ১৪৪ ধারা ভাঙার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। ফজলুল হক হলের সহ-সভাপতি শামসুল আলম এদের সমর্থক ছিলেন।

ইত্তেফাক/আরকেজি