অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘দেশকে সুন্দর করে সাজাতে হলে সবার আগে দুর্নীতি রুখতে হবে। সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে। ঘুষ-দুর্নীতি এ দুটি অপরাধ থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নবীজি ঘুষ-দুর্নীতি পছন্দ করতেন না। আমাদের সবার উচিত প্রিয় নবীর পথ অনুসরণ করা। ঘুষ দিলেই জাহান্নামে যেতে হবে। দেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো কাজ দুদিন দেরি হলেও আমরা ঘুষ দেবো না।’
মঙ্গলবার বিকালে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার’ শিরোনামে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও রয়েছে আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ব। তাই জাতি আমাদের কাছে সেই দুর্নীতিমুক্ত সমাজের প্রত্যাশায় রয়েছে, আমরা সেই দুর্নীতমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’
এসময় মন্ত্রী স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের কাছে এলাকার সন্তান হিসেবে, পরিবারের একজন হিসেবে আমার অনুরোধ- আসুন আমরা সকলে সমস্বরে ‘দুর্নীতিকে না’ বলি। আমরা এই সদর দক্ষিণ উপজেলা থেকেই আজ শুরু করলাম, আর এভাবেই আমরা পুরো দেশকে সাজাবো।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশ ও জাতির কল্যাণে আমরা সকলে আত্মনিয়োগ করব, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলবো জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ। আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’ তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের অসীম সাহস আর তাজা প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। তাদেরকে সম্মানিত করতে পেরে আমি গর্বিত, এই জাতি গর্বিত।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদেরকে মুক্তি এনে দিয়েছেন কিন্তু তার সোনার বাংলার স্বপ্ন অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেওয়ার আগেই কুচক্রীমহলের ঘৃণ্য চক্রান্তে তিনি তা করে যেতে পারেননি। আর জাতির পিতার সেই অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে দেশ সামগ্রিক অর্থেই এগিয়ে চলেছে। সেই এগিয়ে চলার পথ সুগম করতে আমাদেরকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ‘গুলি লাগার পরও কষ্ট মনে হয়নি, দেশের জন্য রক্ত দেওয়াটাই গর্বের’
মন্ত্রী বলেন, ‘মহান স্বাধীনতা ও ৪৯তম জাতীয় দিবস বাংলাদেশের মানুষের কাছে মুক্তির মন্ত্রে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবার দিন। একইসঙ্গে এ দিনটি বেদনা ও আনন্দের দিন, বেদনাকে প্রতিজ্ঞায় পরিণত করে যুদ্ধের শপথ নেওয়ার দিন। একাত্তরের এ দিনে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গণহত্যার সূচনা করে। নিরস্ত্র নিরপরাধ বাঙালির বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তখন মুক্তি সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। তাই আজকের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপালী মণ্ডল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু প্রমুখ।
ইত্তেফাক/কেকে