বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় থাকছে সাড়ে ছয় লাখ সদস্য

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:১২

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বৈঠকে নির্বাচন পূর্ব আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ইসি সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগে দুইদিন, ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোট গ্রহণের পরের দিন-মোট চারদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছিল। এবার গতবারের তুলনায় বেশি সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রাখা হতে পারে।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় ওই আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, এবার ভোটের দায়িত্বে রাখা হচ্ছে সাড়ে ৬ লাখের বেশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। শুধু ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবে ৮০ হাজর ১৬৬ জন পুলিশ। আনসার-ভিডিপি’র নারী-পুরুষ সদস্য থাকবে ৪ লাখ ৭০ হাজার। গ্রাম পুলিশ থাকবে ৪০ হাজার। এর বাইরে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার, কোস্ট গার্ড মিলে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট কেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবে। তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোটগণনা কক্ষে ঢুকতে পারবেন না।

তবে রিটার্নিং বা প্রিজাইডিং অফিসারা চাইলে কেবলমাত্র স্টাইকিং ও মোবাইল টিমের সদস্যরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবে। এছাড়া ভোটের আগে-পরে ১০ দিন সেনাবাহিনীর আলাদা ফোর্স মাঠে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বৃহষ্পতিবারের বৈঠকে। এদিনই সেনাবাহিনীর শীতকালীণ মহড়া শেষ হতে যাচ্ছে।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তরা জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৮৩ টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে প্রতিটি সাধারণ ভোট কেন্দ্রে পুলিশ-১জন (অস্ত্রসহ), আনসার-১জন পিসি (অস্ত্রসহ), আনসার-১ জন এপিসি (অস্ত্র/ লাঠিসহ), আনসার সদস্য-( নারী -৪, পুরুষ-৬) =১০ জন , গ্রাম পুলিশ-১ জন-মোট ১৪ জন থাকবে। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরের গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে থাকবে পুলিশ-২জন (অস্ত্রসহ), আনসার-১ জনপিসি (অস্ত্রসহ), আনসার-১ জন এপিসি (অস্ত্র/লাঠিসহ), আনসার সদস্য-( নারী ৪, পুরুষ ৫) ৯ জন , গ্রাম পুলিশ-১ জন- মোট থাকবে ১৪ জন।

মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রতিটি সাধারণ ভোট কেন্দ্রে পুলিশ-৩ জন (অস্ত্রসহ), আনসার-১ জন পিসি (অস্ত্রসহ), আনসার-১ জন এপিসি (অস্ত্র/ লাঠিসহ), আনসার সদস্য-( নারী ৪, পুরুষ-৬) ১০ জন, গ্রাম পুলিশ-১জন, মোট থাকবে ১৬ জন। মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে থাকবে পুলিশ-৫ জন(অস্ত্রসহ), আনসার-১ জন পিসি (অস্ত্রসহ), আনসার-১জন এপিসি (অস্ত্র/লাঠিসহ), আনসার সদস্য-(নারী-৪, পুরুষ-৫) ৯ জন , গ্রাম পুলিশ-১ জন- মোট থাকবে ১৮ জন। পার্বত্যএলাকায় সাধারণ ভোট কেন্দ্রে পুলিশ-২ জন (অস্ত্রসহ), আনসার-১জন পিসি (অস্ত্রসহ), আনসার-১ জন এপিসি (অস্ত্র/ লাঠিসহ), আনসার সদস্য-( নারী-৪, পুরুষ-৬) ১০ জন , গ্রাম পুলিশ-১ জন, মোট থাকবে ১৫ জন । এছাড়া পার্বত্য এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে ১৬ জন আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান সদস্যরা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিম হিসেবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে পহেলা জানুয়ারি মাঠে থাকবেন। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ৩০০ সংসদীয় আসনে সবমিলিয়ে ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবেন। তারা ভোটের পরও দুইদিনসহ সবমিলিয়ে চারদিন মাঠে থাকবেন। এ সময় তারাঁ নির্বাচনী অপরাধে সংক্ষিপ্ত বিচার করবেন।

সূত্র জানায়, ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ভোটগ্রহণের দুইদিন আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন পর্যন্ত মোট চার দিন মাঠে থাকবেন। আর আনসার সদস্যরা ভোটগ্রহণের তিনদিন আগে মাঠে নেমে থাকবেন পরের দিন পর্যন্ত। ভোটারদের যাতায়াতের পথ নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ ইউনিটগুলোকে নিবিড় টহল দেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে। ভোট কেন্দ্রে ফল প্রকাশের পর তা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে নিরাপদে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দুর্গম এলাকার ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের যাতায়াতে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হবে। ভোটের দিন যান চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। এ নির্বাচনে মোট ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

ইত্তেফাক/আরকেজি