শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগের ১৪টি আসন’

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:৩৬

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ‘আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত খুলনা বিভাগের ১৪টি সংসদীয় আসনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। সহিংসতার শিকার মানুষের নিরাপত্তা ও তড়িত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর দাবি করেছি। একইসঙ্গে চিকিৎসক রাখার প্রস্তাব করেছি।' 

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ভিকটিমের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আইনি সহায়তার জন্য আমরা কমিটিও করেছি। আমাদের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্যও কমিটি করেছি। অপরাধ করবে, বিচার হবে না, অপরাধীরা দায়মুক্তি পেয়ে যাবে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসবে হবে। অপরাধীদের শাস্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে করতে হবে।’ 

মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘২০০১ ও ২০১৪ সালের সহিংসতার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না। এজন্য দেশের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৬১ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। এরমধ্যে খুলনা বিভাগের ১৪টি আসন রয়েছে। আসনগুলো হলো ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা), ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদর একাংশ), যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর), যশোর-৫ (মণিরামপুর), যশোর-৬ (কেশবপুর), মাগুরা-২ (শালিখা-মোহাম্মদপুর-মাগুরা একাংশ), বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লারহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মংলা), খুলনা-১ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা-খানজাহান আলীর একাংশ), খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা), সাতক্ষীরা-২ (সাতক্ষীরা সদর) এবং সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা-কালীগঞ্জ)। এই এলাকাগুলোতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনও আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছি, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করার জন্য।’

আরো পড়ুনঃ ফ্রান্সে আর্থ-সামাজিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা ম্যাক্রোঁর

তিনি আরো বলেন, ‘রাজাকারমুক্ত সংসদ চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, আসম রবরা জামায়াতকে বৈধতা দেওয়ার জন্য ঐকফ্রন্টে যোগ দিয়েছে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সর্বশেষ কামালরা সেটি পূরণ করেছে। যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত ও তাদের দোসর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের পুর্নবাসনের দায়ে ড. কামালদের একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাদেরও বিচার হবে।’ 

মতবিনিময় সভায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘গণমাধ্যমে খবর পেলাম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পাকিস্তান দূতাবাসে মিটিং করেছে। আর লন্ডনে তারেক রহমান পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন বৈঠকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। এই ষড়যন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তান এদেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ভোটের মাধ্যমে অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশ। এদেশ পাকিস্তানি পেতাত্মদের নয়। তারা পাকিস্তানে চলে যাক। নির্বাচনে কেউ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস করার চেষ্টা করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।’
 
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যশোর জেলা শাখার সভাপতি হারুন অর রশিদ, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য, বিএমএ জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক ডা. গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।

ইত্তেফাক/কেকে