শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অণুগল্প

ক্যানাইন টিথ

আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৪১

অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে চাওয়ার ফোনটার ওপারে ঘ্যাষঘেষে কণ্ঠস্বর জোর দিয়ে জানিয়েছিল, বেশি রাতেই আসতে চান। সেই মতো রাত এগারোটা পঁয়ত্রিশে এলেন তিনি।

মাথার উপর চেপে বসানো হুডিতে মুখ স্পষ্ট না হলেও পুরু কালো কাচের চশমার আড়ালে ঢাকা চোখ বিভ্রান্তি ছড়ায়। অন্ধ নন তো? খুক করে কেশে বলি, আমি কিন্তু দাঁতের ডাক্তার।

তা-ই তো চাই।

দাঁত বের করে হাসতেই মুখের দুই পাশে ঝুলে পড়ে ঝকঝকে দুইখান ছুরি। হায়েনার মতো হাসি হেসে তিনি বলেন, কেটেকুটে ছোট করে দেবেন। ঠিক ততটাই, যতটা মানুষের থাকে।

এত বড় ক্যানাইন টিথ বাপের জন্মে দেখিনি বলে শ্বাসকষ্ট হতে থাকে বেশ। মাংসাশী প্রাণীদের এই দুটো দাঁত বড় থাকে, কেননা মাংস ছিঁড়ে খেতে সুবিধে হয় বেশ। শাকাহারী হতে গিয়ে কালে কালে ছোট হয় দাঁত, ঠিক ততটাই, যতটা মানুষেরই থাকে।

গলা শুকিয়ে কাঠ মনে হতেই প্যাকেট জ্যুসের মুখের ছিদ্রে ঢোকানো স্ট্র দুই ঠোঁটে চেপে ধরে দেই জোরে টান। বুকটা ঠান্ডা হয়ে যায় নিমিষেই। সুস্বাদু পানীয় জোর দেয় মনে। বলি, এরকম দাঁত আগে দেখিনি।

দাঁত কাটতে চেয়েছি কি আগে যে দেখবেন?

এখন কেন চাইছেন?

ঘ্যাষঘেষে কণ্ঠস্বর ঠান্ডা হিম ছড়িয়ে জানায়, এখন আর শিকারের গলা কামড়ে ধরে দাঁত ফোটানো লাগে না। প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে, তাই না?

আমার হাতে ধরা প্যাকেটের দিকে ইঙ্গিত তার। বলে, প্যাকেটেই মিলে যায় মানুষের তাজা রক্ত। কী দারুণ স্বাদ, বলুন!

হাতে ধরা প্যাকেটের মুখের ছিদ্রে ঢোকানো স্ট্র দুই ঠোঁটে চেপে আয়েশে টান দিতেই তৃপ্তিতে চোখ যেন বুজে আসে তার। সেভাবেই বলেন, প্রযুক্তি কেটে দেবে দাঁত। কেউ আর টের পাবে না আমি কে।

এরপর চোখ খুলে আমার দিকে তাকিয়ে দিব্যি চোখ টিপে দেন। বলেন, আমরা কে!