শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নগরে পাহাড়ের ছোঁয়া

আপডেট : ২১ মার্চ ২০১৯, ২২:৩১

শিল্পকলায় পার্বত্য মেলা

ইত্তেফাক রিপোর্ট

ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পণ্য এবং পাহাড়ি ফল নিয়ে রাজধানীতে শুরু হয়েছে পার্বত্য মেলা। আর এসবের সঙ্গে রয়েছে পাহাড়ি সংস্কৃতির নৃত্যগীতের আয়োজন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে শিল্পকলা একাডেমি মাঠে শুরু হয়েছে চার দিনের পার্বত্য মেলা। পার্বত্য এলাকার মানুষের জীবন-সংস্কৃতি, পোশাক পরিচ্ছদ, ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সমতলের মানুষদের পরিচয় করিয়ে দিতে এই আয়োজন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রঙিন বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে পার্বত্য মেলার উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম।

ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশের মানুষের সঙ্গে পাহাড়ের নিবিড় সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে এই মেলা। আমাদের জাতি রাষ্ট্রে চাকমা, মারমা, হিন্দু, খ্রিস্টান কোনো বিশেষ পরিচয় নয়। আমরা সকলে মিলে এ দেশের নাগরিক যেখানে অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবতাই আমাদের মূূল ভিত্তি।

বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্য এলাকা বোঝা নয়; সম্পদশালী এলাকা। যারা সেখানে সন্ত্রাস করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায় আমারা পাহাড়িরাও তাদের ঘৃণা করি, তাদের বিচার চাই। সরকারের সহায়তা নিয়ে আমরা সবাই মিলে পার্বত্য এলাকাকে আরও সমৃদ্ধশালী করবো।

পার্বত্য মেলায় স্থান পেয়েছে, পাহাড়ের নানা ফলফলাদি, খাবার ও পোশাক। রয়েছে আনারস, তরমুজ, অগ্নিস্বর কলা, ড্রাগন ফল, তেঁতুল, কাঁঠাল। আছে কাঁচা হলুদ, কফি, লাল, কালো ও সাদা বিন্নি চাল। পাহাড়ি আখ ও সেই আখের তৈরি গুড়, ডায়াবেটিস প্রতিরোধক বিশেষ চা। সবজির মধ্যে আছে পাকা হলুদ বেগুন, আলু, ফরাশ সিম, কুমড়ো, সজনে ডাঁটা, কলার মোচা ও মূলা। পাহাড়ের মানুষদের তৈরি কলাপাতায় মোড়ানো বিন্নি ধানের তৈরি ‘বিনি হোগা’ নামের বিশেষ এক ধরনের পিঠা, কাঁকড়া ফ্রাইসহ আছে হরেক রকমের খাবার। পোশাকের মধ্যে লুঙ্গি গামছা থেকে শুরু করে বিছানা, গায়ের চাদর ও ফতুয়া। অলংকারের মধ্যে রয়েছে হাসুলি, ঝুমকা, চোকার, নানা ধরনের মালা, ব্রেসলেট, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ ও ঝুড়িগুলো। বাঁশ ও বেতের তৈরি সুদৃশ্য সব চেয়ার থেকে নান্দনিকতায় ভরা ফুলদানিতো আছেই। এসবের পাশাপাশি পাহাড়ি মানুষদের উষ্ণ অভ্যর্থনা তো আছেই।

মেলা ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের নানা ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠীর শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, আরণ্যক, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, কারিতাস, পদক্ষেপ ও বাংলাদেশ এ্যাডভেঞ্চার ক্লাব পার্বত্য মেলা ২০১৯ আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করছে।