ফজলে ইলাহী স্বপন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলার ৪টি আসনের মধ্যে কুড়িগ্রাম-২ আসনটি জেলা সদরে হওয়ার সুবাদে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত কোনো প্রার্থীই দলীয় মনোনয়ন পায়নি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোট যুদ্ধে দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন মহাজোটের প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।
কুড়িগ্রাম-২ (কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ি উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেয়ায় নৌকা প্রতীক ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক থাকলেও দলীয় মনোনীত কোনো প্রার্থী নেই এই আসনে। এই আসনে মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন দলের মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও লড়াই হবে মূলত লাঙ্গল ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে।
নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকছেন ধানের শীষ নিয়ে সদ্য গণফোরামে যোগদানকারী ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত মেজর জেনারেল (অব.) আমসাআ আমীন। মহাজোটের আসন ভাগাভাগিতে জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়ায় লাঙ্গল নিয়ে লড়বেন মহাজোটর জাতীয় পার্টিও মনোনীত প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ।
এ ছাড়া এই আসনে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন আবুল বাশার (বিকল্পধারা বাংলাদেশ-কুলা প্রতীক), মো. মোকছেদুর রহমান (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-হাতপাখা প্রতীক), উপেন্দ্র নাথ রায় (বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-কাস্তে প্রতীক), মো. মোনাব্বর হোসেন (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-মই প্রতীক) এবং মো. আব্দুর রশীদ (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-আম প্রতীক)।
নৌকা প্রতীক না থাকলে মহাজোটের অন্তর্ভুক্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেয়ার কারণে লাঙ্গনের নিজস্ব ভোটের সাথে যোগ হবে আওয়ামী লীগের ভোটও।
অন্যদিকে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি’র নিজস্ব কোনো প্রার্থী নির্বাচন না করলেও ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তে এই আসনটিতে গণফোরামের প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে বিএনপি’র নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ধানের শীষে ভোট দেয়ার পাশাপাশি জামায়াতের ভোটগুলোও তাদের পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মহাজোট এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীই কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় পার্টি এবং গণফোরামে যোগদান করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক মেজর জেনারেল (অব.) আ ম সা আ আমিন গণফোরামে যোগ দিয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
অপরদিকে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শিল্পপতি পনির উদ্দিন আহমেদ জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন তিনি।