কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) সংবাদদাতা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রচণ্ড শীতের মাঝেও বইছে উপজেলা নির্বাচনী হাওয়া। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে হওয়ায় সম্ভাব্য প্রায় তিন ডজন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সিনিয়র নেতাদের মন রক্ষার চেষ্টা করছেন। এসব সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যানার, পোস্টার, তোরণ দিয়ে ঢেকে ফেলেছে গোটা উপজেলা। বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জানান দিচ্ছেন। এসব প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরাও বসে নেই। নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানাভাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ উপজেলায় বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্য কোনো দলের প্রার্থী সক্রিয় না থাকায় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগই।
এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক মাঠে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন— বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান হাওলাদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমান হাজরা, জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা দেবদুলাল বসু পল্টু, আওয়ামী লীগ নেতা কমল সেন, জাহাঙ্গীর আলম খান, শেখ রাসেল কলেজের অধ্যক্ষ রবীন্দ্রনাথ বাড়ৈ, কাজী মন্টু কলেজের অধ্যক্ষ বিমেলন্দু সরকার, অ্যাডভোকেট নিখিল দত্ত, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া, কামরুল ইসলাম বাদল, মাইকেল ওঝা, খোকন বালা, উত্তম বাড়ৈ, হান্নান শেখ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল হক চৌধুরী মনির, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা নারায়ণ চন্দ্র দাস, সর্বানন্দ বৈদ্য ও প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস, ভীম চন্দ্র বাগচী।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুজ্জামান খান মিলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল হাজরা, যুবলীগ নেতা মৃনাল কান্তি বিশ্বাস স্বপ্নীল, যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা ও কৃষকলীগ নেতা অরুন মল্লিক।
এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে ভাইস চেয়ারম্যান লক্ষ্মী সরকার, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেনুকা বিশ্বাস, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগম, পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি লিমা আজিজ, কাজী মন্টু কলেজের প্রভাষক গুলশান আরা রানী, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শান্তিলতা বাড়ৈ রাজনৈতিক মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে পাঁচ বছর ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। প্রধানমন্ত্রী যদি আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তাহলে আমাকে মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়ন না দিলে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, দুইবার উপজেলা নির্বাচন করে একবার জয়লাভ করেছি। এই দুই নির্বাচনে আমার সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদারের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও আমাদের দুইজনার মাঝেই লড়াই হবে বলে আমি মনে করি। তবে জননেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা সকলে মিলে তার পক্ষে কাজ করবো।
ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, দীর্ঘদিন কলেজ ও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। এরপর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছি। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বিগত পাঁচ বছর ধরে কোটালীপাড়াবাসীর সেবা করে আসছি। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেওয়া হলে আগামী দিনেও এ জনপদের মানুষের পাশে থেকে সেবা করবো।