শ্রীবরদী (শেরপুর) সংবাদদাতা
শ্রীবরদীতে আমন ধান ক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমণে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কেউ বা ছত্রাকের আক্রমণের ভয়ে ধান পাকার আগেই কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে উত্পাদিত ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবার আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার হেক্টর। এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয়েছে ১৬ হাজার ৮শ ৮৫ হেক্টর। এর মধ্যে ব্রি-৪৯, ব্রি-৬২, বিআর-১১, ধানীগোল্ড, এজেড, বিনা-৭সহ কয়েকটি হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হয়েছে। এর পাশাপাশি দেশীয় জাতের চাষ হয়েছে পাইজাম, তুলশীমালা, কালোজিরা, হালই, গোলাপি ও চাম্পালিসহ বিভিন্ন ধান। এবার প্রাকৃতিকভাবে কোনো প্রকার বন্যা বা খরা হয়নি। এছাড়াও আবহাওয়া আমন চাষের অনুকূল হওয়ায় কৃষকেরা বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন। এর মধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেতে দেখা দিয়েছে ছত্রাকের আক্রমণ। এটা আঞ্চলিকভাবে কৃষকেরা বলছেন, লক্ষিগোয়ের আক্রমণ। বেশিরভাগ আক্রমণ করেছে ব্রি-৪৯ জাতের ধান ক্ষেতে।
উপজেলার শেকদি গ্রামের কৃষক সুরুজ আলী জানান, এবার ৭৫ শতাংশ জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের ধান চাষ করেছেন তিনি। আর কয়েকদিন পর ধান পাকতে শুরু করবে। এখন তার পুরো ক্ষেতেই ছত্রাকের আক্রমণ। তিনি বলেন, ধার দেনা করে আবাদ করেছি। ক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমণের কারণে ফলনে বিপর্যয় ঘটবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
পার্শ্ববর্তী মাটিয়াকুড়া গ্রামের কৃষক হাবিবর, আমজাদ, ছালাম, এবরা মিয়াসহ অনেকের ক্ষেতের অবস্থাও একই।
পুটল গ্রামের কৃষক জয়নাল আবদিন জানান, তার ধানক্ষেতে ছত্রাকে আক্রমণ করেছে। এজন্য তিনি কৃষি অফিসে যান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হাসান তাকে নুইং পাউডার স্প্রে করার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হাসান বলেন, যেসব ক্ষেতের ধান আশি শতাংশ পেকেছে ও ছত্রাকের আক্রমণ করেছে তাদেরকে ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে নুইং পাউডার দিয়ে কিছুটা দমন করা সম্ভব বলেও অনেকে এটা ব্যবহার করছেন। ধান ক্ষেতে ছত্রাক আক্রমণ করলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। তিনি জানান, যেসব ধান ক্ষেতে ছত্রাক আক্রমণ করেছে ওইসব ক্ষেতের ধান দিয়ে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না।