শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফুলবাড়ীর ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ

আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:১৫

নিজ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় বিগত বছরগুলোতে শিক্ষার্থীরা অন্য প্রতিষ্ঠান বা স্থানের শহীদ মিনারে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে আসছিল। কিন্তু এবারই প্রথম দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারেই শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে নিজের মতো করে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ইতোপূর্বে বিদ্যালয়গুলোতে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় শহীদ দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসসহ অন্যান্য জাতীয় দিবসগুলোতে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতে পার্শ্ববর্তী হাটবাজার অথবা নিকটবর্তী কোনো উচ্চ বিদ্যালয় কিংবা কলেজের শহীদ মিনারে যেতে হতো। এতে অনেক কমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরাই যেতে পারতো না। কিন্তু এ বছর সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বর্তমান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দিক-নির্দেশনায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মত্ হাসিনা ভূঁইয়ার সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলার ১০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই একযোগে শহীদ মিনার নির্মাণের কর্মসূচি নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হয়। এ কারণে এ বছর শিশু শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবনির্মিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে।

রামভদ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিরীন বকুল বলেন, এ বছর বিদ্যালয়ে একটি দর্শনীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করায় শিশু শিক্ষার্থীরা সেখানে নিজের মতো করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে। একই সঙ্গে তাদেরকে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ভাষা দিবসের নানা তাত্পর্যসহ বীর শহীদদের বীরত্বের কথামালা নিয়ে। নিজের প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতে পেরে শিশু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও খুব ভালো লেগেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মত্ হাসিনা ভূঁইয়া বলেন, উপজেলার ১০৯টি বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকেরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণসহ দিবসের তাত্পর্য নিয়ে আলোচনা করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেন, শিশু শিক্ষার্থীদের সঠিক ইতিহাস ও বীর শহীদদের বীরত্বের কথা তুলে ধরতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই শহীদ নিমার নির্মাণ হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি বলেন, ভাষা আন্দোলন, বীর ভাষাসৈনিকদের বীরত্বসহ মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার সঠিক ইতিহাস শিশুদের মাঝে তুলে ধরতেই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ কারণেই এবার শিশুরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতে পেরেছে। আগামীতে অন্যান্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই উদ্যোগ নেওয়া হবে।