তেরখাদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শহীদপুর খান এ সবুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংকটের কারণে সাত শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন শিক্ষকমণ্ডলী। মান্ধাতা আমলের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সামনে গাছতলায় বসে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কারিগরি শাখায় দুইটি ট্রেডে ১৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত অধ্যয়ন করছে। ১৯৪৭ সালে হাড়িখালী গ্রামের বিদ্যোত্সাহী ব্যক্তি মরহুম আঃ লতিফ কালা মিয়া মাতব্বর অজপাড়াগাঁয়ের কোমলমতি শিশু সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে এলাকাবাসীদের নিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়টিতে বহু আগে একটি ভবন নির্মাণ করা হয় যা বর্তমানে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষকমণ্ডলী কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। উক্ত ভবনের ছাদ দিয়ে পলেস্তারা খসে পড়ছে। ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ের উপর পলেস্তারা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে এমন দৃষ্টান্ত আছে। বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে ফ্লোর ভেসে যায়। বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মান এবং এসএসসি ও জেএসসির ফলাফল সন্তোষজনক। বিদ্যালয়টির অবস্থান অজপাড়াগাঁয়ে হলেও উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের চেয়ে ফলাফলের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে প্রশংসনীয় ও অভাবনীয় ফলাফল অর্জিত হলেও এখানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের পর্যাপ্ত বাথরুম নেই, ছাত্র-ছাত্রীদের কমনরুম নেই, শহীদ মিনার নেই, বিদ্যালয়ের চারপাশে কোনো প্রাচীর নেই, রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব নেই, আধুনিক বিজ্ঞানাগার ও একটি পাঠাগার আছে যা দীর্ঘদিন ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এখানে নেই রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব। চিত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত শহীদপুর খান এ সবুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির অবস্থান। এ বিদ্যালয়ে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে লেখাপড়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নানাবিধ সমস্যার কারণে কোমলমতি সন্তানরা আধুনিকতার এই যুগে সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষক মহল কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের সুশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এ বিদ্যালয়টি গত চার/পাঁচ বছরে উপজেলার মধ্যে ফলাফলের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আরিফুল ইসলামের যোগদানের পর অতি অল্পদিনের মধ্যে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে এসেছে।
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, শহীদপুর খান এ সবুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ তেরখাদার যে সমস্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভবন সংকটের কারণে ক্লাস কার্যক্রম ব্যাহত, সে সব বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ এনে নতুন ভবন নির্মাণ এবং জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংকটের কারণে ক্লাস কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।