বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নানা সমস্যায় জর্জরিত রৌমারী স্থলবন্দর

আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৯, ২২:২৭

আমির হোসেন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা

ফুলবাড়ী, চরফুলবাড়ী, নতুনবন্দর, চরনতুনবন্দর, চাঁন্দারচরসহ ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা এলাকাগুলোতে খোলা আকাশের নিচে পাথর ক্র্যাশ মেশিনের পাথরের গুঁড়া ও ধুলাবালি কুয়াশার মতো ঢেকে যাওয়ায় শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, ইমিগ্রেশনের যাত্রী ও ঐ এলাকায় বসবাসরত মানুষের সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রৌমারী স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, স্থলবন্দরের আশেপাশের ঘরবাড়ি, গাছপালার পাতায় ইঞ্চি পরিমাণ পাথরের গুঁড়া ও ধুলাবালির স্তূপ পড়েছে। নির্ধারিত স্থান না থাকায় ব্যবসায়ীরা খোলা আকাশের নিচে যত্রতত্র পাথর ভাঙার ক্র্যাশ মেশিন স্থাপন করেছে। রাস্তার পাশে গাড়িতে আপলোড আনলোডে কাজ চলছে। কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন পূর্বপাড় রৌমারী উপজেলায় রৌমারী শুল্ক (স্থল) বন্দরটি অবস্থিত।

স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিক লালমিয়া, হাবিল, ফুলচাল, সাইদুর বলেন, আমরা ক্র্যাশ মেশিনে সারাদিন পাথর ভাঙার কাজ করি। পাথরের গুঁড়া ধুলাবালিতে চারপাশে অন্ধকার হয়ে যায়। খাবার, পানি, নাকমুখ দিয়ে ধুলাবালি প্রবেশ করে সারাবছরই সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্টের মত নানা রোগে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে প্রায় ১৫/২০ গাড়ি গার্মেন্টস তুলা, সিমেন্ট, বিভিন্ন প্লাস্টিক আসবাবপত্র রপ্তানি হচ্ে্ছ। আমদানি হচ্ছে পাথর, কয়লা ও মাঝে-মধ্যে আদা। প্রতিদিন রৌমারী শুল্ক (স্থল) বন্দর থেকে মালামাল পরিবহন করে নেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন শহরে। রাস্তাঘাটের প্রস্থ কম ও খানাখন্দ থাকায় মালামাল পরিবহন খরচ বেশি পড়ে লাভ কম হয়।

রৌমারী শুল্ক (স্থলবন্দর) এলসি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, স্থলবন্দরে বড় সমস্যা মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক থাকে না, ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগের সমস্যা, সঠিক সময়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। শুল্ক স্থলবন্দরে ক্র্যাশিং মেশিনের পাথরের গুঁড়া ও ধুলাবালি আকাশের মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায়। প্রায় দুই কিলোমিটার আশেপাশের এলাকাজুড়ে রাস্তাঘাট, গাছপালা, ঘরবাড়ি, কাপড় চোপড়ে আটকিয়ে যায়। পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হলে নির্দিষ্ট স্থানে পাথর ক্র্যাশিং মেশিন বসানো হবে। এতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ ধুলাবালি রোধ হবে।

রৌমারী শুল্ক (স্থলবন্দর) এলসি অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি শহিদুল ইসলাম শালু বলেন, এ স্থলবন্দর নতুন পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হলে আমরা বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের ব্যবস্থা করবো। বর্তমানে ধুলাবালি প্রতিরোধে স্যালো মেশিন দিয়ে পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। সরকার রৌমারী স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপান্তরিত করলে এলাকার হাজার হাজার দরিদ্র শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোমিনুল ইসলাম হুমায়ুন বলেন, স্থলবন্দরের কর্মরত শ্রমিকরা মুখে মাস্ক ব্যবহার না করায় নাকমুখ দিয়ে পাথরের গুঁড়া ও ধুলাবালি প্রবেশ করে সর্দিকাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।