শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চলনবিলের স্বপ্নের ডুব সড়ক

আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৯, ২২:২৯

পাল্টে যাবে তিন লক্ষাধিক মানুষের

আর্থ-সামাজিক অবস্থা

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা

বৃহত্তর চলনবিলের তাড়াশ ও গুরুদাসপুর উপজেলার ৫০টি গ্রামের প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের আন্তঃযোগাযোগের জন্য গভীর চলনবিলের মাঝে নির্মিত হচ্ছে তাদের স্বপ্নের ডুব সড়ক। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ১০ কোটি ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪৯০ টাকা ব্যয়ে তাড়াশ পশ্চিম ওয়াপদা বাঁধ থেকে নাদৌ সৈয়দপুর বাজার ঘাট পর্যন্ত ৮.৫৩৬ কিলোমিটার ডুব (সাবমারসিবল) সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে আগামী মাসের মধ্যেই।

তাড়াশ উপজেলার প্রত্যন্ত নাদৌ সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক আলতাব আলী, রহিজউদ্দিন, আলমাছ আলী, রহিম মন্ডল, সুজাব সরকার, তাহেরুল ইসলাম এবং গুরুদাসপুর উপজেলার রুহাই গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ, ছোহরাব আলী, জলিল শেখ, রায়হান ফকির, আব্দুস সোবাহান বলেন, তাদের সমস্ত আবাদি জমি চলনবিলের মধ্যে। মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে ইরি-বোরো, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টা, গম, কালোজিরাসহ সব ধরনের ফসলাদি চাষাবাদ হয় ওই জমিগুলোতে। চলনবিলের মাঝে কোনো সড়ক না থাকায় তাদের উত্পাদিত ফসল বাড়ি আনা ও বাজারজাত করার ক্ষেত্রে মাথায় করে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে যেতে হতো। বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার করতেন কখনো নৌকা বা মহিষের গাড়ি। নিরুপায় হয়ে প্রতিবছর গুণতে হতো দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ টাকা। অপচয় হতো সময়ের।

বিল এলাকার ধামাইচ গ্রাম, মাগুরা বিনোদ, কুন্দইল, কামারশন, মাকরশন, ইশ্বরপুর, হেমনগর, নওখাদা, বিন্নাবাড়ি, চরকুশাবাড়ি, দবিরগঞ্জ, রানী গ্রাম, কাটাবাড়ি, খুবজীপুর, বামুন বাড়িয়া, বিলসা, রুহাই, বাহাদুর পাড়াসহ কমপক্ষে ৫০টি গ্রামের মানুষ সহজেই উত্পাদিত ফসল দুই উপজেলার বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ হাট-বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। তাদের ছেলে-মেয়ে বাড়ি থেকেই উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করবে। অসুস্থদেরও চিকিত্সাসেবা নিশ্চিত হবে। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মোবাশ্বের চৌধুরী জানান, ডুব সড়কটির প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ মাস খানেকের মধ্যেই হয়ে যাবে। দুর্গম বিল এলাকা হওয়ায় ৮.৫৩৬ কিলোমিটার ডুব (সাবমারসিবল) সড়ক নির্মাণ করতে আড়াই বছরের মতো সময় লেগে গিয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আলী আহম্মেদ বলেন, আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। চলনবিলের মাঝে ডুব (সাবমারসিবল) সড়কটি নির্মাণের ফলে ওই অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।