বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য ২০১৫ থেকে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০

আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৪২

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন এদেশের মানুষের জন্য একটি স্বাধীন ভূ-খণ্ডের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্য অর্জনে তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। তাঁর হাত ধরেই এদেশের মানুষ স্বাধীনতা লাভ করেছে। মাটি ও মানুষকে নিয়েই জাতির পিতা আজীবন কাজ করে গিয়েছেন। তাঁর আমলে প্রণীত আমাদের সংবিধানে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। তিনি চেয়েছিলেন, সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে বৈষম্যহীন একটি সমাজ ব্যবস্থা, যেখানে জাত-পাত -এর কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। দেশের উত্তর-দক্ষিণ বা পূর্ব-পশ্চিমে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। গ্রাম আর শহরের মাঝে কোনো পার্থক্য থাকবে না। ‘কাউকে পিছনে ফেলে, কাউকে অর্থনীতির মূল স্রোতধারার বাইরে রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা নয়’। এই নীতিতেই প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাটি তিনি সাজিয়েছিলেন এদেশের মানুষকে বৈষম্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে। তিনি তাঁর কাজটি শেষ করে যেতে পারেননি। ঘাতকদের নির্মম বুলেট তাঁকে থামিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তাঁর আদর্শ বিলীন হয়নি। তাঁর আদর্শ সকল সময়েই আমাদের সকল ভালো কাজে অনুপ্রেরণার উত্স, আমাদের চির অনুসরণীয়। তাঁর আদর্শ এদেশের মানুষের জন্য অম্লান হয়ে থাকবে অনন্তকাল পর্যন্ত, থাকবে সূর্যের মতো দেদীপ্যমান।

বঙ্গবন্ধু সবসময় পরিকল্পিত উন্নয়নের চেষ্টা করে গিয়েছেন। বাংলার মানুষের জন্য তাঁর দর্শন তিনি ১৯৭৩ সালে তাঁর প্রণীত প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তুলে ধরেছিলেন। তিনি জাতির উন্নয়নে দেশের গণমানুষের সম্পৃক্ততার বিষয়টি তুলে ধরে তাঁর প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মুখবন্ধে বলেন, ‘দেশের জনগণের পক্ষ থেকে কঠোর পরিশ্রম ও প্রয়োজনে যে কোনও ত্যাগের জন্য সর্বাত্মক অঙ্গীকার ছাড়া কোনও পরিকল্পনা, তা যত সুলিখিতই হোক না কেন, সঠিক বাস্তবায়ন হতে পারে না’। তিনি মানুষের মুক্তির সেই দর্শনের কথা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পুনরাবৃত্তি করেন। জাতিসংঘে প্রথমবার বাংলায় ভাষণ দেওয়ার সময় বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা সকলে মিলে এমন একটি পৃথিবী গড়ে তুলি, যেখানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, যুদ্ধ ও মানুষের সকল কষ্ট দূরীভূত হবে, বৈশ্বিক শান্তি অর্জিত হবে এবং মানবজাতির কল্যাণ রক্ষিত হবে।’ বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে যে পথ দেখিয়েছিলেন, যে দর্শন উপহার দিয়েছিলেন, সেটাই আজকে আমরা প্রতিধ্বনিত হতে শুনি জাতিসংঘে সর্বসম্মতিতে গৃহীত ২০৩০ সালের বৈশ্বিক উন্নয়ন এজেন্ডা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-তে, যার মূল বক্তব্যই হলো ‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়, কাউকে পেছনে ফেলে নয়’। আমরা অনুপ্রাণিত হই, গর্বিত হই যখন দেখি, বঙ্গবন্ধুর স্বাপ্নিক আদর্শ বিশ্ব দরবারে আজ সমাদৃত। আজ তাঁর দেখানো পথেই হাঁটছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হেঁটে আজ আমরা বাংলাদেশের সত্যিকারের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে দৃঢ় প্রত্যয়ী।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি’র কথা বলতে গেলে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) প্রাসঙ্গিক ভাবেই এসে যায়। বর্তমান এসডিজি’র পূর্বে প্রথমবারের মতো ২০০০ সালে সারা বিশ্বের জন্য জাতিসংঘ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য বা এমডিজি সর্ব-সম্মতভাবে গ্রহণ করেছিল। এর আগে কখনও এতো বড় পরিসরে সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে সারা বিশ্বের জন্য লক্ষ্যভিত্তিক একক উন্নয়ন এজেন্ডা নেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তত্কালীন বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসেবে বাংলাদেশকে এই বৈশ্বিক এজেন্ডায় সম্পৃক্ত করেন। কিন্তু ২০০২ থেকে ২০০৬ মেয়াদে দেশের পরিচালনা উন্নয়নমুখী ছিল না, তাই এমডিজি নিয়েও দেশে বিশেষ কোনো কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পুনরায় দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর তিনি এমডিজি’র আলোকে লক্ষ্যভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এমডিজি অর্জনের লক্ষ্যে ‘রূপকল্প : ২০২১’ ও ‘ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা’র মাধ্যমে দেশকে প্রস্তুত করেন। তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে পরিকল্পনার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে এমডিজি’র ৮টি অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনেই বাংলাদেশ সফলতা দেখায়।

আমরা দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগে, ২০১৩ সালেই অর্জন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেই। দারিদ্র্য হ্রাসকরণ সংক্রান্ত এমডিজি-১ লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বে অগ্রগামী ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক ‘বিশেষ স্বীকৃতি’ লাভ করে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশকে এ জন্য ‘ডিপ্লোমা এ্যাওয়ার্ড’ও প্রদান করে। একই কারণে বাংলাদেশ ‘সাউথ-সাউথ এ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে। এমডিজি’র চতুর্থ লক্ষ্য শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে ২০১০ সালেই আমরা ২০১৫-এর লক্ষ্য অর্জন করি। এর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘ ‘এমডিজি এ্যাওয়ার্ড-২০১০’ এ ভূষিত করে। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার সংক্রান্ত এমডিজি-৪ ও এমডিজি-৫-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করেছিল। এর ফলে বাংলাদেশের জন্য এ দুইটি লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হয়েছিল। এ কারণে বাংলাদেশকে আরেকটি ‘সাউথ-সাউথ এ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করা হয়। নারী শিক্ষায় ব্যাপক সাফল্যের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ হতে ‘ইউনেস্কো পিস ট্রি’ এ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। এমডিজি-৫-এর আওতায় নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর ভূমিকার জন্য ‘এজেন্ট অব চেইঞ্জ’ এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয় এবং ইউএন-উইমেন এর পক্ষ থেকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ঘোষণা করা হয়। এমডিজি-৭-এর লক্ষ্য অনুযায়ী পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত মোকাবিলায় সাফল্যের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের জন্য UNEP হতে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

এমডিজি’র সবগুলো লক্ষ্য অর্জনে সফলতা দেখাবার মাধ্যমে বাংলাদেশ সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিল। তাই জাতিসংঘের ২০১৩ সালের প্রতিবেদনে এমডিজি অর্জনে সফল ১৮টি দেশের তালিকায় জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। এমনটি সম্ভব হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে। এমডিজি অর্জনকে প্রধানমন্ত্রী সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলেই আমরা এ সকল লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে গিয়েছি। এ সময়ে সরকার ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০১১-১৫) মাধ্যমে পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করে বলেই এমডিজি’র আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ এই সফলতা দেখাতে পেরেছে। তাই আজ আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যেমন সাফল্য আমরা দেখিয়েছিলাম, তেমনই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও কাজ করে যাচ্ছি। এমডিজি-তে অনেক আর্থ-সামাজিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকলেও অনেকগুলো অর্থনৈতিক বিষয় অনুল্লেখিত ছিল। অর্থনৈতিক নিয়ামকগুলোর সঙ্গে পরিবেশগত বিষয়াদি এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে এসডিজিতে বিস্তারিতভাবে নিয়ে আসা হয়েছে। এসডিজি’র এই সব নতুনত্বকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সাজিয়েছি এবং সে অনুযায়ী আমরা গত তিন বছর নানামুখী প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এসডিজি বাস্তবায়নে সকল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নিয়মিত তদারকি করে যাচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রয়োজনীয় সকল নীতি কাঠামো প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে। এসডিজি অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য এটুআই হতে ডিজিটাল এ্যাপস্ ‘এসডিজি ট্র্যাকার’ তৈরি করা হয়েছে, যার সঙ্গে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সংযুক্ত আছে সকল মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরসমূহ। এর আলোকে আমরা গত বছর জাতিসংঘে আমাদের আংশিক অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেছিলাম আর এ বছর পরিকল্পনা কমিশন একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রণয়ন করছে।

শেখ হাসিনার সরকারের পরিচালনায় গত দশ বছরে দেশ বদলেছে, গতিশীল হয়েছে অর্থনীতির চাকা, আর তাই নজরকাড়া উন্নতির মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের হাত ধরেই আমরা ক্রমে ক্রমে এসডিজি’র অধিকাংশ অভীষ্ট লক্ষ্যের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছি। এক দশকে আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে ২০ লাখ কোটি টাকারও বেশি উন্নয়ন করেছি। বড় ধরনের পরিবর্তনের মাধ্যমে স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শুরুতে কিছুটা সক্ষমতার অভাব থাকলেও এখন যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা শতভাগ সক্ষমতা অর্জন করছি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি টেকসই গতিশীলতার মধ্যে এসেছে। এই প্রকল্পগুলো যখন শতভাগ বাস্তবায়ন হবে তখন বাংলাদেশ হবে একটি সমৃদ্ধ দেশ। এর প্রভাব ইতোমধ্যেই পরিলক্ষিত হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে আমাদের সাম্প্রতিক অগ্রগতি তার সুস্পষ্ট প্রমাণ।

বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে দেশকে অনেক দূর নিয়ে এসেছেন। তাঁর হিরন্ময় নেতৃত্বে আমরা গত দশ বছরে জনবান্ধব উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করেছি যার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র্য ও অসমতার হ্রাস। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতিমালা, বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ তা সুবিন্যস্ত করে এর গভীরতা বাড়ানো, অনগ্রসর অঞ্চলের উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণের জোগান, কৃষি ও পল্লী উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান, কর ব্যবস্থার গণমুখী সংস্কার প্রভৃতি নীতি মানুষে মানুষে বৈষম্য, গ্রাম-শহরের পার্থক্য, অঞ্চলভিত্তিক অসমতা হ্রাসে ভূমিকা রাখছে। শেখ হাসিনা’র হাত ধরেই আমরা ২০১৫ সালের আগেই এমডিজি অর্জন করেছি। আর তাই, যাঁকে বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বস, ২০১৮ সালে বিশ্বের ২৬তম ক্ষমতাধর নারী হিসেবে মনোনীত করেছে; তাঁর হাত ধরেই আমাদের সরকারের গৃহীত পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে ২০৩০ সালের আগেই বাংলাদেশ এসডিজি’র সকল লক্ষ্য অর্জন করে সারা বিশ্বের উপরে থাকবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

n লেখক :এফসিএ, এমপি ও মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার