বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্বামী বটে!

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ২২:২৪

সৌদি ফেরত স্ত্রী আফরোজা বেগম (২৬) এক সন্তানের জননী। দেশে ফিরেছেন ৬ মাস আগে। স্বামী শাহজাহান ভাবতেন আফরোজার কাছে অনেক টাকা। আর এই টাকা নিয়ে অশান্তি। নিয়মিত ঝগড়া। এক পর্যায় শাহজাহান স্ত্রী আফরোজাকে গলাটিপে হত্যা করেন। পরে লাশ দুই বন্ধুর সহায়তায় বাড়ির পাশের সেপটি ট্যাংকে ফেলে দেয়। সহায়তার জন্য শাহজাহান তার  দুই বন্ধু খোকন মিয়া ও মুকুল মিয়াকে দিয়েছেন সাড়ে ৬ হাজার টাকা। গত ৩ জানুয়ারি গাজীপুরের ভাওয়াইদ এলাকায় আফরোজার নিজ বাসায় এ হত্যাকাণ্ড হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি এ চাঞ্চল্যকর ঘটনার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ডেমরা থেকে ঘাতক স্বামী শাহজাহানসহ তার দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) সারোয়ার-বিন-কাশেম।

র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ৮ বছর আগে সুতার মিলে কাজ করার সময় শাহজাহান ও আফরোজার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের পারিবারিক জীবনে কলহ লেগে থাকতো। বিভিন্ন সময় স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করতেন শাহজাহান। ২০১৬ সালে আফরোজা কাজের উদ্দেশে সৌদি যান। গত বছরের মাঝামাঝি ফিরে আসেন। স্ত্রীর কাছে বিদেশে অর্জিত টাকার হিসাব চাইলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়। গত ৩০ ডিসেম্বর আফরোজা ভোট দিতে গেলে বাড়ি ফেরার পর কোথায় গিয়েছিল জানতে চেয়ে তাকে মারধর করে শাহজাহান। গত ৩ জানুয়ারি সকালে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাদের একমাত্র মেয়েকে পাশের ঘরে রেখে স্ত্রী আফরোজাকে গলাটিপে হত্যা করে শাহজাহান। এরপর খাটের নিচে মরদেহ লুকিয়ে রাখেন। র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারোয়ার-বিন-কাশেম আরো বলেন, এ অবস্থায় সাহায্য করার জন্য বন্ধু খোকন ও মুকুলকে বাসায় ডাকেন শাহজাহান। তিনজন মিলে ওইদিন রাতে বাসার পাশে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন আফরোজার মরদেহ। এজন্য শাহজাহানের কাছ থেকে খোকন ৪ হাজার এবং মুকুল ২ হাজার ৫০০ টাকা নেন।

টাকা নিয়ে খোকন ও মুকুল ভাবে ঘটনার জানাজানি হয়ে গেলে তারা ফেঁসে যেতে পারেন। তাই নিজ থেকে তারা স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানান। তারা বলেন, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শাহজাহানকে সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলতে দেখেছেন। এরপর মরদেহ উদ্ধার হলে খোকন ও মুকুল হয়ে যান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। ঘটনার পর থেকেই শাহজাহান পলাতক ছিলেন। পরে তদন্ত করতে গিয়ে ঘটনার মূল অভিযুক্ত শাহজাহান এবং সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে খোকন ও মুকুলকে আটক করা হয়।