শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০১৯, ২২:৩৯

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ১৪ দল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। স্বাধীনতাবিরোধী খুনিদের আর কখনো ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ১৪ দল সতর্ক আছে, কোনো চক্রান্ত সফল হবে না। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে দেশ যত এগিয়ে যাবে ষড়যন্ত্র ততই বেশি হবে। চক্রান্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা থেমে নেই। শত্রুরা আঘাত হানার চেষ্টা করবে, তাই চোখ কান খোলা রেখে সতর্ক থাকতে হবে। দেশকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে হবে।

সভাপতির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেন, অসাম্প্রদায়িক শোষণমুক্ত দেশ গড়তে ১৪ দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে। চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি। তবে স্বাধীনতাবিরোধী খুনিরা যাতে আর কখনো ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য ১৪ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এখন চারদিকে শুধু আওয়ামী লীগার। এ কারণে আমার ভয় হয়, আমি আতঙ্কিত। এই নব্য আওয়ামী লীগারদের অতীতে রাজপথে দেখা পাইনি। এরা বিএনপি-জামায়াতের চেয়ে ভয়ঙ্কর। এরা সুযোগ সন্ধানী। এদের চিনে রাখতে হবে।  মনে রাখতে হবে বঙ্গবন্ধুর পাশে খুনি মুশতাকও কিন্তু ছিলেন। বর্ণচোরার দল নতুন রূপে নতুনভাবে এখন আভির্ভূত হয়েছে। এ জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ১৪ দল চোখের মণির মতো শেখ হাসিনাকে রক্ষা করবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যগুলো সংকলন আকারে নতুন প্রজন্মের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু সুস্পষ্ট উচ্চারণ করেছিলেন— এদেশ দুর্নীতির দেশ হতে দিবো না, চোরের দেশ হতে দেবো না। দেশ আজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে; কিছু লোক ধনী হচ্ছে, কিছু লোক  রাস্তায় পড়ে থাকছে।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, সাম্প্রদায়িকতা রুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে এই মাটিতে পাঁচটা কলঙ্ক রচিত হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধে রাজাকারের কলঙ্ক, পনেরই আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যার কলঙ্ক, পনেরই আগস্টের পর সামরিক শাসনের জবর দখলের কলঙ্ক, সংবিধান থেকে চার নীতি বাদ দেওয়ার কলঙ্ক ও একুশে আগস্টে শেখ হাসিনাকে হত্যার কলঙ্ক জাতির ললাটে আছে।

জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। এখনো লন্ডনে-সিঙ্গাপুরে বসে ষড়যন্ত্র হয়। তারা দেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় নিয়ে যেতে চায়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এখন জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ব্যর্থ নয়, ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবেই কাজ করেছিলেন। পঁচাত্তর পরবর্তী তার কর্মকাণ্ডেই এটা প্রমাণিত। তিনি বলেন, বিএনপি এখন সংকটে, ধুঁকে ধুঁকে মরছে। দেশের মানুষ তাদের আর দেখতে চায় না।

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাসদ (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সাম্যবাদী দলের এমএ গনি, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায় প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।