ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের চারপাশে অবস্থিত ১৫টি ইটভাটার কালো ধোঁয়া ও পোড়া ছাইয়ের গুঁড়া কারাগারের পরিবেশ দূষিত করছে। কালো ধোঁয়া ও ছাইয়ের গুঁড়ার কারণে কারাবন্দিরা তো বটেই, রাজেন্দ্রপুর, বাঘৈর, করেরগাঁও, বালুরটেকসহ ৭টি গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কারা কর্তৃপক্ষ ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে একাধিক দরখাস্ত দিয়েও কোনো সুফল পায়নি। আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে বন্দিদের উন্নত পরিবেশে রাখতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দীন রোড থেকে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় স্থানান্তর করে। পুরনো কারাগার থেকে সকল বন্দিকেই কেরানীগঞ্জে নির্মিত সুবিশাল আধুনিক কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু আধুনিক এ কেন্দ্রীয় কারাগারের চারপাশে তেঘুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জজ মিয়ার ১১টি, ফারুক আহমেদের ২টি ও রিয়াজ উদ্দিনের ২টি ইটভাটাসহ ১৫টি ইটভাটায় প্রতিনিয়ত কালো ধোঁয়া ও পোড়া ছাই উড়ছে এবং এতে কারাবন্দিরাসহ এলাকার লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জের জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানান, তারা কারাগারের চারপাশের ইটভাটাগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর গত এক বছরে ৪টি দরখাস্ত দিয়েও কোনো সুফল পাননি। কারাগারের আশেপাশের ইটভাটাগুলো অপসারণের কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং প্রতিবছর ইটভাটাগুলোকে নবায়ন করা হচ্ছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রমথ রঞ্জন ঘটক ও মোহাম্মদ মজিরুল হক কুন্ডা সাধুর বাজার এলাকায় দুটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ভাটাগুলোর মালিকদের ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন এবং ইটভাটা দুটি গুঁড়িয়ে দেন। কিন্তু কারাগারের পাশের ইটভাটাগুলো সরিয়ে নিতে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইটভাটা মালিক জজমিয়া এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ভাটাগুলোর ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চারপাশের ইটভাটাগুলো দ্রুত অপসারণের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন।