শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আর কত প্রাণ গেলে সড়ক নিরাপদ হবে?

আপডেট : ২২ মার্চ ২০১৯, ২২:১৮

 ‘আবরার তোর স্মরণে ভয় পাই না মরণে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’—শিক্ষার্থীদের এমন স্লোগানে উত্তাল ছিল ঢাকার রাজপথ। খণ্ড খণ্ড অবস্থান আর বিক্ষোভে রাজধানীর প্রগতি সরণি অবরোধ করে রাখেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের আশ্বাসেও শিক্ষার্থীদের অবস্থানের নড়চড় হয়নি। মেয়রের ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরই সেখানে একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। নিহত আবরারের সহপাঠীদের দিনভর আন্দোলনে বারিধারা নতুনবাজার থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাড্ডা, রামপুরা, খিলক্ষেত ও বিমানবন্দর এলাকায় দেখা দেয় তীব্র যানজট। ‘জন্মিলে মরিতে হবে’—এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে অপঘাতে যত্রতত্র মৃত্যু কারো কাম্য নয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রধান বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ পথচারী। তাঁরা কোনো আইন মানেন না। ফুটওভারব্রিজ, আন্ডারপাস, জেব্রাক্রসিং থাকার পরও চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পারাপার হন। কথা অসত্য নয়, কিন্তু আবরারের ক্ষেত্রে তো এই কথা বলার অবকাশ নাই। জেব্রাক্রসিং দিয়েই রাস্তা পার হচ্ছিলেন তিনি। অন্য একটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়েই সুপ্রভাত পরিবহনের বাস প্রথমে আবরারকে ধাক্কা দেয়। দুটি বাসের মাঝখানে পড়ে যান তিনি। পরে সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি তাঁকে চাপা দেয়। ঘাতক বাস দুটি জব্দ করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে এক চালককে। বাসটির রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে বাতিল করেছেন বিআরটিএ।

গত বছরের জুলাইয়ে রাজধানীর রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হন। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। সেই আন্দোলনে সক্রিয় থেকে নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়েছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। যে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন আবরার, সেই সড়কেই প্রাণ গেল তাঁর। আর কত আবরারের প্রাণ গেলে সড়ক নিরাপদ হবে—সবার মধ্যে এখন এই প্রশ্ন।

নারায়ণগঞ্জ