বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘জয় বাংলাকে’ জাতীয় স্লোগান ঘোষণার দাবি সালমানের

আপডেট : ১১ মার্চ ২০১৯, ০০:২৭

সংবিধান সংশোধন করে ‘জয়বাংলা’কে জাতীয়  স্লোগান ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)। গতকাল রবিবার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রস্তাব দেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, আমি প্রস্তাব করতে চাই— সংবিধান সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে আমরা জাতির পিতা ঘোষণা করেছি, ঠিক তেমনি সংবিধান সংশোধন করে ‘জয়বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করা হোক। তিনি বলেন, আমার নির্বাচনের সময় বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কিছু নেতৃবৃন্দ আমাকে সমর্থন দেন। আমার সঙ্গে আওয়ামী লীগের যারা ছিলেন তারা বলতেন ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’। কিন্তু আমি দেখতাম বিএনপি-জাপার লোকজন যারা আমাকে সমর্থন দিয়েছিলেন তারা জয়বাংলা বলতে লজ্জা পেতেন, চাপে পড়ে কেউ কেউ জয়বাংলা বলেছেন। আমি তাদের বলেছি, জয়বাংলা বলতে আপনারা লজ্জা পাচ্ছেন কেন? জয়বাংলা তো আওয়ামী লীগের নয়, এটা জাতীয় স্লোগান। আমরা জয়বাংলা স্লোগানের ওপরই ছাত্র আন্দোলন করেছি। জয়বাংলা স্লোগানেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এটা আমাদের দেশের ও জাতীয় স্লোগান। আমরা দেখি আমরা রাজনীতিবিদরা বিভিন্ন স্থানে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করি। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তারা বক্তব্যের শেষে জয়বাংলা বলেন না। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করি— আপনারা কেন জয়বাংলা বলেন না? তারা আমাকে বলেন, আমরা তো নিরপেক্ষ, বললে দলীয় হয়ে যাব। যেই স্লোগানে এ দেশ স্বাধীন না হলে তারা সরকারি কর্মকর্তা হতে পারতেন না, তারা কীভাবে বলেন এটা দলীয় স্লোগান!

প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, কয়েকটি খবরের কাগজ আছে যারা বঙ্গবন্ধু শব্দটা ব্যবহার করে না। এমনকি একটি কাগজ আছে, যেই কাগজটির মালিকের পরিবারের লোক এ সংসদে এমপি আছেন, তারাও কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেন না, শুধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন। তার এ বক্তব্যের সময় সংরক্ষিত আসনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সদস্যরা হইচই করে প্রতিবাদ জানান।

সালমান বলেন, কেউ যদি আমাকে ১০ বছর আগে বলতো ১০ বছর পর বাংলাদেশ এ জায়গায় আসবে। আমি কিন্তু বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ যেই জায়গায় এসেছে তা অকল্পনীয়। কেউ বলে উনি বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান করেছেন বলে আমরা এ জায়গায় এসেছি, কারও মতে কৃষিতে বিপ্লবের কারণে এখানে আসতে পেরেছি। মূল কারণ শেখ হাসিনা সত্, দক্ষ, নিষ্ঠাবান ও দেশপ্রেমিক। সেই কারণেই আমরা এখানে আসতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, আমি শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম। তিনি সত্, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক ছিলেন। স্বাধীনতার পর অনেক ব্যবসায়ী নানা কারণে তার কাছে এসেছিলেন। চাইলে তিনি কোটি কোটি টাকা বানাতে পারতেন। যেহেতু তিনি সত্ ছিলেন সেজন্য তিনি তাদের পাত্তা দেননি। উনি সত্, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক ছিলেন; কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার গুণাবলিগুলো পেয়েছিলেন। ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাও বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতার গুণাবলি পেয়েছেন; তারাও সত্, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক। সালমান এফ রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন- তিনি যা করছেন দেশের জন্য, নিজের জন্য কিছু করছেন না; তিনি সবসময় বলেন- তিনি তার ছেলেমেয়েদের শিক্ষাটা দিতে পেরেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, তিনি অটিজমের ওপর কাজ করে আজ বিশ্বনন্দিত। শেখ রেহানাও চাইলে অনেক সম্পদ বানাতে পারতেন, তিনিও সেদিকে না তাকিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়েছেন। শেখ রেহানার ছেলে ববি গত ৭ বছর ধরে দেশে থাকেন। কোনো মন্ত্রী বা সচিব বলতে পারবেন না- কোনো বদলি বা ব্যবসার তদ্বিরের জন্য ববির কাছ থেকে একটা ফোন পেয়েছেন। শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটেনের এমপি হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার গুণাবলি শুধু তার ছেলে-মেয়েরাই পাননি, নাতি-নাতনিরাও পেয়েছেন।