শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নাইকো মামলা

‘অসুস্থ খালেদা জিয়াকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আদালতে আনা হয়েছে’

আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৯, ০০:২৫

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে স্থাপিত আদালতে হাজির করা হয়েছে। আদালতে হাজির হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আইনজীবীদেরকে খালেদা জিয়া বলেছেন তিনি অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নাড়ানো ও চলাফেরা করতে পারছেন না। অসুস্থ থাকা এবং মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন দাখিল না করায় আগামী পহেলা এপ্রিল এ মামলার অভিযোগ গঠনের উপর পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য রেখেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। এরপরই খালেদা জিয়া আইনজীবীদেরকে বলেন, কেন আপনারা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আমার আবেদন দাখিল করছেন না। এ পর্যায়ে আইনজীবীরা জানান, ম্যাডাম আবেদনটি প্রস্তুত রয়েছে। মামলার আলামত হিসেবে জব্দ তালিকায় যেসব নথিপত্র রয়েছে সেগুলোর অনুলিপি পেলেই তা পর্যালোচনা করে আবেদনটি দাখিল করা হবে। যদিও জব্দ তালিকার নথি চেয়ে করা খালেদা জিয়ার আবেদন গতকাল খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তার চিকিত্সা হচ্ছে না। অসহ্য ব্যথার কারণে তিনি হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। আদালতে আসার আগে তিনি বমি করেছেন। আদালত কক্ষেও উনি মাথা সোজা করে বসে থাকতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিত্সার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আনতে চাইলেও তিনি আসেননি—এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পিজিতে খালেদা জিয়ার কোনো চিকিত্সা হয় না। আমরা বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলছি। কিন্তু তাকে নেওয়া হচ্ছে না। মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, উনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আদালতের আদেশ রয়েছে কিন্তু উনি তো নিজেই চিকিত্সা নিতে যাননি। চিকিত্সা নিতে না চাইলে আমাদের কিছু করার নেই।

গতকাল নাইকো মামলায় বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির করা হয়। এরপরই এজলাসে আসেন বিচারক। খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, জব্দ তালিকার নথি এখনো আমরা পাইনি। আবেদন করেছি কিন্তু নথি দেওয়া হচ্ছে না। নথি না পেলে অভিযোগ গঠনের শুনানি করা সম্ভব হবে না। এজন্য সময় চান তারা।

দুদক আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, জব্দ তালিকার  নথি চেয়ে মামলার বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে আসামি পক্ষ। এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, মামলার নথিপত্র পাওয়া আসামির আইনগত অধিকার। অভিযোগ গঠনের শুনানির আগেই এগুলো আমাদের দেখা দরকার। দুদক কৌঁসুলি বলেন, মামলার বিচারে যে কাগজপত্র ব্যবহার করা হবে সেটা তারা দেখার সুযোগ পাবেন। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, সকল আসামি আবেদন দিয়ে অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেছে। অথচ বারবার নির্দেশ দেওয়ার পরেও আপনারা খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করছেন না। এরপরই পহেলা এপ্রিল পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য রেখে বিচারক বলেন, ওইদিন শুনানি করতে ব্যর্থ হলে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে। বিচারকের এজলাস ত্যাগের পরই বিএনপির মহাসচিব ও তার আইনজীবীদের সঙ্গে মামলা ও নিজের অসুস্থতা নিয়ে কথা বলেন খালেদা জিয়া।