বিজেপির দুই প্রাক্তন ছাত্রনেতা এই তথ্য ফাঁস করলেন
গত সপ্তাহে ভারতের জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের(জেএনইউ) সাবেক ছাত্রনেতা কানহাইয়াসহ দশ ছাত্রের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে দিল্লির পাতিয়ালা আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু যে তথ্য-প্রমাণের ভরসায় ওই চার্জশিট দেওয়া হয়, সেটি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির দুই প্রাক্তন সদস্য। তিন বছর আগে এবিভিপির করা অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু এখন এবিভিপির দুই প্রাক্তন সদস্যের দাবি, ঘটনার দিন কানহাইয়াদের ফাঁসানোর লক্ষ্যে পাকিস্তানপন্থি স্লোগান দেন এবিভিপির সদস্য-রাই। উদ্দেশ্য ছিল, কানহাইয়াদের বিরুদ্ধে দেশ-দ্রোহের অভিযোগ আনা।
যতীন গোরাইয়া ও প্রদীপ নারওয়াল নামে দুই প্রাক্তন এবিভিপি সদস্যের দাবি, কানহাইয়াকে ফাঁসাতে পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দিয়েছিলেন এবিভিপি সদস্যরা। প্রদীপের কথায়, ‘লক্ষ্য ছিল কানহাইয়াদের দেশবিরোধী সাব্যস্ত করা এবং সে সময়ে দেশজুড়ে দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনায় যে রোষের আবহ তৈরি হয়েছিল, সেদিক থেকে নজর ঘোরানো। এই দুই লক্ষ্যেই পরিকল্পিত প্রচারে নেমেছিল এবিভিপি।’ একসময়ে এবিভিপির সদস্য হলেও বর্তমানে হরিয়ানা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রদীপ। তার ওই দলবদল নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন তুলেছে এবিভিপি নেতৃত্ব। দলীয় নেতা সৌরভ শর্মার কথায়, ‘ওই ব্যক্তি কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। স্বভাবতই তিনি এখন কংগ্রেসের ভাষাতেই কথা বলবেন।’ খবর এনডিটিভির।
আজ শনিবার থেকে ওই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা। এদিকে কানহাইয়াদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মূল অভিযোগ ঘিরেই প্রশ্ন উঠেছে। ভারতে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগে মামলা শুরু করতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এই অনুমতি দিতে প্রাথমিকভাবে আপত্তি জানিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। ওই অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের পক্ষে মামলার কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। কারণ, জেএনইউ-কাণ্ডের পরেই আলাদা করে নয়াদিল্লির জেলা প্রশাসককে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করে কেজরিওয়াল সরকার। জেলা প্রশাসক রিপোর্টে জানান, ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কানহাইয়া, উমর খলিদ বা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো মূল অভিযুক্তরা ছিলেন না। ফলে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দেশদ্রোহের অভিযোগ খারিজ করে দেয় কেজরিওয়াল সরকার। তবে দিল্লির স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অনুমতি না পাওয়া গেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি পুলিশ।