বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মঙ্গলে বইছে বাতাস, শব্দ রেকর্ড করল নাসা

আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:৫১

বহু বছর ধরে মঙ্গল গ্রহের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। এই গ্রহ বসবাসের যোগ্য কিনা তা নিয়েও চলছে গবেষণা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর পুরোপুরি সমাধান হয়নি। তাই মঙ্গলের রহস্য আরো ভালোভাবে উন্মোচনের জন্য সেখানে পাঠানো হয় নাসার যান ‘ইনসাইট’। 

গত ৫ মে ক্যালিফোর্নিয়ার পশ্চিম উপকূল থেকে ইনসাইটকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এরপর এটাকে পাড়ি দিতে হয়েছে ৩০ কোটি মাইল বা ৪৫ কোটি ৮০ লাখ কিলোমিটার পথ। নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ৫৩ মিনিটে যানটি সফলভাবে মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করে। অবতরণের ছয় মিনিটের মাথায় যানটি থেকে মঙ্গলের ছবি পাঠানো শুরু হয়। শুধু তাই নয়, সেখানে বাতাসের শব্দও শুনতে পায়।

গত ১ ডিসেম্বর মঙ্গলের পিঠে ওই বাতাসের শব্দ শুনেছে পায় ইনসাইট। তারপর তা রেকর্ড করে নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরিতে রিলে করে পাঠায় ইনসাইট ল্যান্ডার।

বাতাসের শব্দ পরীক্ষা করে নাসা জানিয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর মঙ্গলের বুকে বইতে থাকা বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ মাইল। তার মানে, সেকেন্ডে ৫ থেকে ৭ মিটার। তবে এই গতিবেগ পৃথিবীর চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় সমতল এলাকায় পৃথিবীতে বাতাস বইতে থাকে গড়ে সেকেন্ডে ২০ মিটার গতিবেগে। সামান্য কম-বেশিও হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসা জানিয়েছে, ইনসাইটের দুটি যন্ত্রে বাতাসের শব্দ ধরা পড়ে। তাদের একটি হচ্ছে ‘এয়ার প্রেসার সেন্সর’। যা বসানো রয়েছে ইনসাইটের ভিতরে। অন্য যন্ত্রটি ‘সাইসমোমিটার’। এটি রাখা রয়েছে ইনসাইটের ‘ডেক’-এ। 

নাসা জানিয়েছে, এয়ার প্রেসার সেন্সরে প্রথম ধরা পড়ে বাতাসের কম্পন। বাতাস বয়ে যাওয়ার ফলে কেঁপে উঠেছিল ইনসাইট। নাসার ল্যান্ডারের সেই কম্পন ধরা পড়েছে সাইসমোমিটারে।

মঙ্গলে বাতাসের শব্দ নাসা ইন্টারনেটে ছেড়েছে। শব্দটি অনেক দূর থেকে আসায় তা শুনতে একটু কষ্ট করতে হচ্ছে। কানে হেডফোন লাগিয়ে বাতাসের শব্দ শুনতে বলছে নাসা।

আরো পড়ুন: দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন ঐশী

ইনসাইটের প্রকল্প ব্যবস্থাপক টম হফম্যান বলেন, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে ইনসাইট যখন ঢুকছিল, তখন তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২ হাজার ৩০০ মাইল। তার পরের সাড়ে ছয় মিনিটে দ্রুত কমিয়ে আনা হয় যানটির গতিবেগ। ইনসাইট যখন লাল মাটি থেকে এক মাইল ওপরে ছিল, তখন নাসার ওই ল্যান্ডারের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় মাত্র এক হাজার কিলোমিটার। পরে তা আরো কমানো হয়।

ইনসাইটের এই মিশনকে ২০৩০-এর দশকে মঙ্গলে মনুষ্যবাহী অনুসন্ধানী যান পাঠানোর প্রস্তুতি হিসেবে নিয়েছে নাসা। সুত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

ইত্তেফাক/জেডএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন