শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘পরিপক্ব’ সাদমানের আত্মবিশ্বাস

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০১৮, ১০:২৩

সাদমান ইসলাম অনিক। ২০১৪ সালে যুব বিশ্বকাপ খেলা এই বাঁহাতি ওপেনার বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে খুব নজর কেড়েছেন এমন নয়। তবে গত কয়েক বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাট হাতে বেশ ধারাবাহিক সাদমান। যার জের হিসেবে নির্বাচকরা তাকে সুযোগ দিয়েছেন এইচপি, ‘এ’ দলে। টেস্ট ক্রিকেটের জন্যই তার পরিচর্যা করেছেন নির্বাচকরা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটটা তাই সাদমানের কাছে সবসময় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।

নির্বাচকদের চেষ্টাও বিফলে যায়নি। ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লিগেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। ছয় ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি ও তিন হাফ সেঞ্চুরিতে ৬৪.৮০ গড়ে ৬৪৮ রান করেছেন সাদমান। চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে টিম ম্যানেজমেন্টের পরীক্ষাও উতরে গেছেন তিনি। তাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের দলে ১৪তম সদস্য হিসেবে ডাক পেয়েছেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪২ ম্যাচ খেলে টেস্ট দলে সুযোগ পেলেন সাদমান। যেখানে সাত সেঞ্চুরিতে ৪৬.৫০ গড়ে ৩ হাজার ২৩ রান করেছেন তিনি। তার মতে, পরিপক্ব হয়েই জাতীয় দলে এসেছেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিণত হওয়াটা অনেক জরুরি। আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাই আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে সাদমানকে।

গতকাল অনুশীলনের পর তিনি বলেছেন, ঠিক সময়েই জাতীয় দলে এসেছেন। সাদমান বলেন, ‘আমি তো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলছি অনেক দিন থেকেই, প্রায় চার-পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে। আমি যেমন পারফরম্যান্স করে আসছি হয়ত তা ঠিক আছে। একজন ব্যাটসম্যান যখন জাতীয় দলে খেলতে যায় তখন একটু পরিপক্ব হয়ে যাওয়াই ভালো। আমার মনে হয় আমি যেমন খেলেছি হয়ত আমি একটু পরিপক্ব হয়েছি। আর প্রস্তুতি ম্যাচটি একটু ভালো খেলেছি। তবে নির্বাচকদের কাছে মনে হয় কিছুটা ভালো মনে হয়েছে আর সেই কারণেই আমার সুযোগ এসেছে।’

ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিণত হয়ে জাতীয় দলে আসা অনেক জরুরি মনে করেন সাদমান। তাতে বিভিন্ন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘পরিণত হয়ে আসাটা আসলে অনেক জরুরি। যেমন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলে আসার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা হয়ত একটু চিন্তাভাবনা করেই খেলতে হয় সবার। আর আমার কাছে মনে হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আর জাতীয় দলের পার্থক্য অনেক। কিন্তু যেহেতু আমি অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছি তাই আমি জানি যে কিভাবে ইনিংসটা গুছিয়ে নিতে হবে। এই বিষয়টি যদি আমার জানা থাকে তাহলে আমার মনে হয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটু হলেও ভালো করার সুযোগ থাকে।’

জাতীয় দলে আসার স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এই তরুণের মনে বিশ্বাস ছিল, পারফর্ম করলে সুযোগ আসবেই। গতকাল সাদমান বলেছেন, ‘জাতীয় দলে খেলা তো সকলেরই স্বপ্ন থাকে। যেমন আমি বিশ্বকাপের পর এসে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে শুরু করে সবখানে খেলে আসছি। এটাই লক্ষ্য ছিল যে যেখানেই খেলব সেখানেই পারফর্ম করতে থাকব। কোনো একদিন সুযোগ আসবে। আমি যদি পারফর্ম করতে থাকি তাহলে অবশ্যই কোনো একদিন সুযোগ আসবে।’

বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম ইকবালই সাদমানের আদর্শ। টেস্টের জন্য লম্বা সময় ব্যাটিং অনুশীলন সবসময়ই করেন তিনি। প্রস্তুতি ম্যাচে ৭৩ রানের ইনিংস দেখে কোচ স্টিভ রোডস তাকে বলেছেন, ডিফেন্স নিয়ে কাজ করতে। কোচের পরামর্শ মেনে স্পিন খেলায় আরও উন্নতি আনতে চান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

ইত্তেফাক/কেআই