শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বগুড়ার বাজারে আমন ধানের দাম কম, হতাশ কৃষক

আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৮

বগুড়ায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে পুরোদমে ধানকাটা শুরু হতে আরো এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাবে। আগাম রোপণ করা এসব ধান হাটে উঠছে। বগুড়ার হাটগুলোতে নতুন আমন ধান উঠলেও দাম কম হওয়ায় চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছে। মৌসুমের শুরুতেই আমন ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে সাড়ে ৬৫০ টাকা মন।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জেলায় এবার ১ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু জমির ধান কাটামাড়াই শেষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে এবার আমনের ফলন হয়েছে গড়ে ৩ দশমিক ৫ মেট্রিকটন।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও শাজাহানপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার মহোৎসব। উঠানজুড়ে চলছে ধান মাড়াই উৎসব। নন্দীগ্রাম উপজেলার কাথম গ্রামের চাষি মোস্তাফিজুর রহমান এবার ১৪ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। ১৪ বিঘা জমির মধ্যে চারবিঘা নিজের, ১০বিঘা অন্যের কাছ থেকে পত্তন নেওয়া। বিনা-৭ জাতের ধান চাষ করেছেন। বিঘায় ফলন হচ্ছে  গড়ে ১৫ মণ। কাটা-মাড়াই শেষে বাজারে তোলার পর প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৬০০ টাকায়। একবিঘা জমির ধান বিক্রি করে হাতে পেয়েছে ৯ হাজার টাকা। কাটা-মাড়াইয়ের আড়াই হাজার টাকা খরচ বাদ দিয়ে হাতে থাকে ৬৫০০ টাকা। পত্তনি জমিতে বিঘাপ্রতি আমনচাষে খরচ হয়েছে গড়ে ১৫ হাজার টাকা। পত্তনি জমিতে আমনচাষে লোকসান যাচ্ছে বিঘাপ্রতি গড়ে ৮৫০০ টাকা। আর নিজের মালিকানা জমিতে লোকসান যাচ্ছে গড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।

ধুন্দার গ্রামের কৃষক হযরত আলী বলেন,দুই ফসলি একবিঘা জমির পত্তনমূল্য ১৪ হাজার টাকা। এক ফসলের জন্য জমি পত্তনি খরচ সাতহাজার, বিঘাপ্রতি খরচ ১৭ হাজার ৭০০ টাকা। খেত থেকে পাওয়া ১৫ মণ ধান ৬০০ মণ দরে বিক্রি করে পাওয়া গেছে ৯ হাজার টাকা। বিঘায় লোকসান ৮ হাজার ৭০০ টাকা।

ধানের বড় মোকাম নন্দীগ্রাম উপজলোর রণবাঘা হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রনবাঘা হাটে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ মণ ধানের আমদানি হচ্ছে।

বাজারে ধানবিক্রি করতে আসা গুন্দাইল গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, গতবছর খেত থেকে ধান কেটে মাড়াই করে হাটে তুলে একমণ ধানের দাম পেয়েছি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। অথচ এবার সেই ধানের দাম গেড়ে ৬০০ টাকা।

চাচা-ভাতজিা রাইচমলি অ্যান্ড ট্রেডার্সের মেজবাহুল হক বলনে, প্রায় একমাস ধরে হাটে ধানের আমদানি হচ্ছে। প্রতিমণ বিনা-৭ জাতের ধান ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ দরে কেনাবেচা হচ্ছে। গত বছর এই সময়ে বাজারে ধানের দাম ছিল গড়ে প্রতিমণ ৮০০ টাকা। এখানকার ধান যাচ্ছে কুষ্টিয়ার খাজানগর, চাঁপাইননাবগঞ্জসহ সারাদেশে। ধান ব্যবসায়ী মশিদুল ইসলাম বলেন, এখনো কৃষকের পুরোদমে ধানকাটা শুরু হয়নি অথচ বাজারে ধানের আমদানি প্রচুর। আমদানি বেশি হলেও দাম কম।

ইত্তেফাক/বিএএফ