শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রাজশাহীতে অটোচালক খুনের রহস্য উদঘাটন

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৫০

রাজশাহীর মহানগরীর অটোরিক্সা চালক জসিম উদ্দিন জয়কে গোদাগাড়ীতে নিয়ে খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) শাহ্ মখদুম জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) হেমায়েত উল্লাহ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। ডিসি জানান, ‘অটোচালক জসিমকে তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু জসিম নিজেই ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করেন। এ সময় তার অপর এক বন্ধু সুমন জসিমের হাত-পা ধরে ছিল।’

ডিসি আরও জানান, ‘নিহত অটোরিক্সা চালক জসিম গত ৭ জানুয়ারি সকাল অনুমান ৭টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে অটো নিয়ে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি। পরিবারের লোকজন বিকেল থেকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি পরও পায়নি। পরদিন ৮ জানুয়ারি জয়ের চাচাতো মামা শাহ্ মখদুম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।’

তদন্তে শাহ্ মখদুম থানা পুলিশ জানতে পারে, মামলার ১ নং আসামি শাহ্ মখদুম থানার শেখপাড়া বড়বনগ্রামের আবুল কালামের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৩) এবং ২ নং আসামি গোদাগাড়ী থানার মাটিকাটা গ্রামের মৃত শাহ আলমের ছেলে সুমন আলী (২৬) গত ৭ জানুয়ারি দুপুর অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে শাহ্ মখদুম থানার নওদাপাড়া বাস টার্মিনালের সামনে থেকে অটোচালক জয়কে অপহরণ করে। এরপর তাকে গোদাগাড়ী থানার জলাহার গ্রামের কার্বের মোড়ের দক্ষিণ পাশে জনৈক শফিকুল হাজির পুকুর পাড়ের জঙ্গলে নিয়ে ৩ নং আসামি মাটিকাটা গ্রামের মরিফুলের ছেলে রাজিব আলীর (২৫) সহায়তায় ওইদিন সন্ধ্যায় জয়কে জবাই করে হত্যার পর লাশ পুকুর পাড়ে জঙ্গলের লুকিয়ে রাখে।

এরপর তারা জয়ের অটোরিকশাটি ১নং আসামি জসিমের দুলাভাইয়ের বাড়ি নাটোরের আহমদপুরে লুকিয়ে রাখে। পুলিশ জসিম ও সুমনকে আটক করে ঘটনাস্থল থেকে জয়ের গলা কাটা লাশ উদ্ধার ও ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

পরদিন ঘটনাস্থলের পাশ থেকে জবাইয়ের কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও জামাকাপড় উদ্ধার এবং ৩ নং আসামী রাজিবকে গ্রেফতার করে। ১০ জানুয়ারি আসামীদের নিয়ে নাটোরে অভিযান চালিয়ে অটোরিক্সাটিও উদ্ধার করা হয়।

উপ-কমিশনার জানান, ‘অটোরিক্সা চালক জয়ের সব থেকে কাছের বন্ধু জসিমই তাকে জবাই করেছে ও সুমন তার হাত-পা ধরে ছিল। এর আগে তাকে নেশাদ্রব্য জিনিস খাইয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন করে। রাজিব ও সুমন মেসে থেকে নগরীর একটি হোটেলে কাজ করতেন। কাজের আড়ালে তারা জয়কে খুন ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ভয়ংকর পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার পর প্রদান আসামি জসিম অটোচালক জয়ের বাড়িতে গিয়ে একাধিকবার দাওয়াত খায়। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ বা কোনো চক্র জড়িত কী না? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

আরও পড়ুনঃ লালপুরে দুর্ঘটনায় পাওয়ার টিলার চালকের মৃত্যু

আসামিদের আদালতে পাঠিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হতে পারে বলে পুলিশ আশা করছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে শাহ্ মখদুম জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) তারিকুল ইসলাম, এসি হাফিজুল ইসলাম ও শাহ্ মখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ প্রমূখ প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

ইত্তেফাক/নূহু