শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

১০টি বেওয়ারিশ লাশ ৬ বছর পড়ে ছিল

আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:১৭

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেড হাউজে ছয় বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ ১০টি লাশ অবশেষে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জানাজা শেষে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থানে লাশগুলো দাফন করা হয়। রংপুর মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় রায় বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলায় বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্নভাবে মৃত্যুবরণ করা ১০টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে হাসপাতালের ডেড হাউজে ছয় বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে ছিল। তাদের কোনও স্বজন বা পরিচিত কেউ লাশগুলো নিতে আসেনি। 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেড হাউজের তিনটি ফ্রিজের দুটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। একটি সচল থাকলেও টিকমতো কাজ করে না। ফলে ১০টি বেওয়ারিশ লাশ অযত্নে অবহেলায় সেখানে পড়ে ছিলো। ফ্রিজিং ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বেশির ভাগ লাশ বিকৃত হয়ে গেছে। কোনো লাশ কঙ্কাল এবং কোনটা গলে পঁচে গেছে। লাশ পঁচা দুর্গন্ধে ডেড হাউজের আশেপাশে সাধারণ মানুষের যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

হাসপাতালের ডোম মানু জানান, ‘লাশগুলোর একটিকেও চেনার উপায় ছিল না। ডেড হাউজের ফ্রিজ ভালো থাকলে লাশগুলোর এমন অবস্থা হতো না। কারণ বেওয়ারিশ হিসেবে লাশগুলো থাকলেও নিখোঁজ হিসেবে অনেকের স্বজন ডেড হাউজে আসতেন। তবে চেহারা বিকৃত হয়ে যাওয়ায় তারা লাশ চিনতে পারেনি। ফলে তারা ফিরে গেছেন।’

আরও পড়ুনঃ রাজশাহীতে অটোচালক খুনের রহস্য উদঘাটন

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মানিক জানান, ‘বেওয়ারিশ লাশগুলো দাফন করার জন্য অনেকবার জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং সিটি করপোরেশনকে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে লাশগুলো ডেড হাউজে পড়ে ছিল।’

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় রায় সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসন ও সিটি মেয়রকে বেওয়ারিশ লাশ সৎকার করার অনুরোধ করি। ফলে তাদের সবার ঐকান্তিক ইচ্ছায় রংপুর সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে ১০টি বেওয়ারিশ লাশ জানাজার মাধ্যমে রংপুর মহানগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।’

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের সহকারী পুলিশ কমিশনার আলতাফ হোসেন জানান, ‘পুলিশ কমিশনারের উদ্যোগে ১০টি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করা হয়েছে।’

ইত্তেফাক/নূহু