শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখা যাত্রাশিল্পীরা ভালো নেই

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:৩৮

এক সময় মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর এলাকায় বহু যাত্রাশিল্পী বসবাস করতেন। সেখানকার শত শত লোক অভিনয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী চিত্র ফুটিয়ে তুলতেন। এ এলাকার অভিনীত রূপবান, কমলার বনবাস, লইলি মজুনর প্রেমকাহিনী, কারবালার ইতিহাস, রসমধুসহ নানা ধরণের শিক্ষণীয় যাত্রাপালা সারাদেশে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছিলো। এখন আর সেটা নেই। আজ এসব যাত্রাশিল্পীদের দুর্দিন। জীবিকার তাগিদে যাত্রার অভিনয় বাদ দিয়ে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হয়ে পড়ছেন অনেকই। কেউবা বেকার জীবন পার করছেন।

জানা গেছে,  এ এলাকায় ৪টি সরকার অনুমোদিত সংগঠনসহ মোট ২১ থেকে ২৫ টি সংগঠনের প্রায় ৭শ থেকে সাড়ে ৭ শত যাত্রা শিল্পী ছিলো। তাদের প্রধান আয়ের উৎস ছিল যাত্রা পালায় অভিনয় করা। তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অভিনয় করে তাদের জীবিকার নির্বাহ করতো। অনেক সংগঠনের বয়স প্রায় ২৮ থেকে ৩০ বছর। যাত্রা শিল্পীরা ১ থেকে ৬ মাস প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে কোনো একটি চরিত্রে অভিনয় করতে পারতো। একটি নাটকের উপর যাত্রাপালা করতে গেলে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি চরিত্রের প্রয়োজন হতো। তবে আনুমানিক এ এলাকায় ১’শ শিল্পী আছেন যারা ব্যবসার পাশাপাশি যাত্রা পালার অভিনয় করে থাকে। এরমধ্যে  নিউ যমুনা, নবরূপ, নিউ জয়ন্তী ও কল্পনা অপেরার সরকারি অনুমোদন রয়েছে। তাদের কেন্দ্র করে বাকী সব সংগঠন কাজ করে আসছে।

আরো পুড়ুন: মদ খেয়ে নাচতে কোন বাধা নেই: ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট

যাত্রাপালার শিল্পী গোপাল জানান, ‘তিনি এখন মুদি দোকানের পাশাপাশি যাত্রার অভিনয় করেন। তার পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে তিনি এখন মুদি দোকান করেন।’

কল্পনা অপেরারা স্বত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ যাত্রা শিল্পী উন্নয়ন পরিষদের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক লিটন ভূঁইয়া জানান, ‘আমরা বছরের যাত্রা মৌসুমে তিন মাস যাত্রার কাজ করি। আর বছরের বাকি ৯ মাস বেকার থেকে ধার দেনা করে চলি। আমারা অন্য কোনো কাজ করতে পারি না। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা রিকশা, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন কাজ করেন। কিন্তু যারা এসমস্ত কাজ করতে পারিনা তারাই বাকি নয় মাস বেকার থাকি। তাই সরকারের কাছ আমাদের দাবি; আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’

ইত্তেফাক/বিএএফ