শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জোসনা তার পরিবারের কাছে ফিরতে চান

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১৭:৪১

ছোটবেলায় হারিয়ে গিয়েছিলেন জোসনা। তখন তার বয়স চার-পাঁচ বছর। এখন জোসনার বয়স ২২। আজ তার স্বামী-সংসার সবই হয়েছে। কিন্তু তিনি জানেন না পরিবারের সন্ধান। ছোটবেলায় হারিয়ে ফেলা তার নিজ পরিবারের জন্য, তার আপনজনদের জন্য তার মন কাঁদে। তিনি তার বাবা-মাকে দেখতে চান। তাদের কাছে ফিরতে চান। যেতে চান জন্ম ঠিকানায়।

কিন্তু কিভাবে? কিছুই যে তার মনে নেই! শুধু মনে আছে পিতা আবুল হাসেম ও মা পিয়ারা বেগমের নাম। তারা ৪ বোন ৩ ভাইয়ের মধ্যে বড় বোন রিনা, মেজ বোন স্বপ্না, ছোট বোন শাহিনুর এবং জুয়েল নামে এক ভাইয়ের নামও মনে আছে জোসনার। নিজ জন্ম এলাকা ছাতিয়ানীর নাম ছাড়া জোসনা তার জেলা বা উপজেলার নাম কিছুই মনে করতে পারেন না।

বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) জোসনার সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, তার স্বামী শহিদুল ইসলাম। গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামে। জোসনা কান্না জড়িতকণ্ঠে ভাগ্য বিড়ম্বনার কথা বলেন, চার-পাঁচ বছর বয়সের সময় ছাতিয়ানী এলাকা থেকে তিনি হারিয়ে যান। সেখান থেকে একজন লোক তাকে নিয়ে আসেন। পরে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে এক মহিলা তাকে নিয়ে এসে গাজীপুর সালনার পলাশটেক জামে মসজিদ এলাকার আবু সাইদের কাছে কাজের মেয়ে হিসাবে তুলে দেন।

জোসনা আরো জানান, সেখানেই তিনি কাজের মেয়ে হিসেবে বড় হন। আবু সাইদ-নুরন্নাহার দম্পতি তাকে কন্যা স্নেহে বড় করেন। আবু সাইদের ৪ ছেলে ও ৫ জন মেয়ে রয়েছে। তারা সকলে প্রতিষ্ঠিত। ১ বছর আগে ঘটকের মাধ্যমে সালনায় ব্রডব্যান্ড কোম্পানীতে লাইন অপারেটর হিসেবে চাকুরীরত শহিদুল ইসলামের সঙ্গে জোসনার বিয়ে হয়। তিনিও সালনা এলাকাতেই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

আরও পড়ুনঃ রাজশাহীতে পদ্মায় বিজিবি-বিএসএফ যৌথ টহলের সিদ্ধান্ত

বর্তমানে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জোসনা। এ অবস্থায় স্বামীর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়ার রাজিবপুর গ্রামে অবস্থান করছেন তিনি। বিষয়টি পত্রিকায় তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকের কাছে অনুরোধ রেখে জোসনা বলেন, ‘আমার প্রকৃত পরিচয় এবং জন্ম ঠিকানার জন্য সব সময় মন কাঁদে। আমি আমার পিতা-মাতার মুখ দেখতে চাই। তাদের কাছে যেতে চাই।’

ইত্তেফাক/নূহু