বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাসপাতাল চত্বরের গাছতলায় সন্তান জন্ম, জবাব দিতে নার্সকে আল্টিমেটাম

আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:২৩

পঞ্চগড়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে গাছের নিচে সন্তান জন্ম দেওয়ার ঘটনায় ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। ক্ষুব্ধরা এ ঘটনার সঙ্গে  জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে রীনা বেগম নামে ওই প্রসূতিকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই হাসপাতালের মিডওয়াইভ নার্স শাবানা বেগমের বিরুদ্ধে। পরে ওই প্রসূতি হাসপাতাল চত্বরে একটি গাছ তলায় খোলা আকাশের নিচে মাটিতে সন্তান প্রসব করেন।

শনিবার রাতেই ওই প্রসূতি সন্তানসহ বাসায় গেছেন। বর্তমানে ওই মা ও তার সন্তান নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। দুজনেই ভালো আছেন।

এদিকে এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত মিডওয়াইফ নার্স শাবানা বেগমকে ক্লোজ করে শোকজ করা হয়েছে। ৩ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জাহিদুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার রাতে তার স্ত্রী রীনা বেগমের প্রসব বেদনা উঠে। শনিবার সকালে তাকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রথম সন্তান সিজার করে হওয়ার কথা শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষনিক ওই প্রসূতিকে ছাড়পত্র দেয়। এসময় তিনি টাকা ও রীনা বেগমকে নেওয়ার জন্য গাড়ি সংগ্রহে বাইরে যান।

রীনা বেগম জানান, ছাড়পত্র দেওয়ার পর হাসপাতালের মিডওয়াইভ নার্স শাবানা তাদের বার বার চলে যেতে চাপ দিতে থাকেন। তার স্বামী বাইরে থাকায় এসময় তারা এক ঘণ্টা সময় চান। কিন্তু তাদের হাসপাতাল থেকে চলে যেতে জোর করেন ওই নার্স। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে ব্যাগ নিয়ে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নেমে যান তিনি। এসময় পুনরায় তার প্রসব বেদনা উঠলে হাসপাতাল চত্বরের খোলা জায়গায় ইউক্যালিপটাস গাছের নীচে পুত্র সন্তান প্রসব করেন।

আরো পড়ুন: ভারতে কর্মস্থলে নারীদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা, পাচ্ছেন ছুটি

বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা বলে দায়ী করছেন ওই প্রসূতির পরিবার। অন্যদিকে গাছ তলায় সন্তান প্রসবের ঘটনায় স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, এমন ঘটনা যেন আর কোথাও না ঘটে এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

ঘটনার বিচার দাবি এলাকাবাসীর। ছবি: ইত্তেফাক

বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হারুন অর রশীদ জানান, নির্মম ও অমানবিক এ ঘটনার দোষীদের চিহিৃত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মো. জাহিদ হাসান বলেন, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয়সহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন বলেন, তদন্ত কমিটির তদন্তে হাসপাতালের কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই গাছের নীচে সন্তান প্রসব করেন রীনা বেগম। ছবি: ইত্তেফাক

ইত্তেফাক/জেডএইচ