রাঙ্গামাটির বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী বিজয় দত্ত পরলোক গমন করেছেন। শুক্রবার (৮ফেব্রুয়ারি) রাত ১০.৪০ মিনিটে তিনি মারা যান। তিনি শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দির পরিচালনা কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
এদিকে তার মৃত্যুর সংবাদ শহরের ছড়িয়ে পড়লে রিজার্ভ বাজার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তাকে শেষবারের মতো দেখতে তার নিজ বাড়িতে অগনিত মানুষ এসে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায়।
এ সময় খবর পেয়ে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সাবেক সদস্য ও চিত্রশিল্পী রতিকান্ত তংচঙ্গ্যাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ছুটে আসেন।
উল্লেখ্য, চিত্রশিল্পী বিজয় দত্ত মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রিজার্ভ বাজারের গীতাশ্রম এলাকার নিজ বাসভবনে সময় পার করেছেন। চিত্রকলার ওপর প্রাতিষ্ঠানিক কোন স্বীকৃতি না থাকলেও একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছায় ১৯৬১ হতে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের জুবলী রোডের ফজলী আর্ট এ কাজ করার সুবাদে দক্ষতা অর্জন করেন।
পরবর্তীতে জন্মস্থান রাঙ্গামাটিতে এসে তিনি চিত্রশিল্পী হিসাবে পেশাগত জীবন শুরু করেন। ২০১৩ সাল পর্যন্ত একাধারে ৫২ বছর তিনি ছিলেন নিজ পেশায় সক্রিয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ, তুরেস্কর প্রেসিডেন্ট সোনাই, তুর্কি নেতা কামাল আতাতুর্ক, সুদানের বাদশাহ হোসাইনসহ বিশ্বের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির পোট্টেট এঁকে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। রাঙ্গামাটির কাঠের ওপর খোদাই করা মানচিত্র তৈরি করে সকলের প্রশংসা পান এই গুণী চিত্রশিল্পী।
আরও পড়ুনঃ প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী শাকিলের মাতার ইন্তেকাল
রাঙ্গামাটি জেলা শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, উসাইসহ বিভন্ন প্রতিষ্ঠানে চিত্রকলার প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে নতুন চিত্রশিল্পী গড়ার কাজে মূল্যবান ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৬ সালে রাঙ্গামাটি ফোক ফেস্টিভ্যালের প্রদর্শনীতে সেরা শিল্পীর সম্মননার পাশাপাশি রাঙ্গামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চারুকলা একাডেমির সম্মাননা লাভ করেন।
ইত্তেফাক/নূহু