শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ক্যাম্প ইনচার্জ ও পুলিশের ওপর রোহিঙ্গাদের হামলা, আটক ১০

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০১৯, ১৭:০২

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অদুরে অবস্থিত নৌকার মাঠের আধিপাত্যকে বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ক্যাম্প ইনচার্জসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে রোহিঙ্গারা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭-৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়লে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়।

এ সময় সেনা সদস্য পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ১০ জন রোহিঙ্গাকে আটক করতে সক্ষম হয়। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আটক সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা হচ্ছে কুতুপালং ক্যাম্প-২ এর মো. ইসমাইল (২৩), পিতা আব্দুর রহিম। কুতুপালং ৬ এর মাহমুদ হোসেন (৩০), পিতা মোহাম্মদ জলিল। ক্যাম্প-২ এর মোহাম্মদ আলম (১৮), পিতা হাবিব উল্যাহ। মোহাম্মদ (২৯), পিতা ছৈয়দ আলম। ভুট্টু আলম (৫০), পিতা সাহাব মিয়া। ক্যাম্প-৭ এর মো. রফিক (১৪), পিতা শামসুল আলম। ক্যাম্প-৬ এর মোহাম্মদ ইউনুছ (১৮), পিতা মোহাম্মদ আইয়ুব। মোহাম্মদ রফিক (১৮), পিতা আলী আহম্মদ। মোহাম্মদ আমিন (১৮), পিতা দিল মোহাম্মদ। ক্যাম্প-৭ এর খায়ের মোহাম্মদ (৫৫), পিতা জাহেদ হোসেন।

রবিবার দুপুর ১টার দিকে এ প্রতিবেদন সংগ্রহকালে কুতুপালং ক্যাম্পের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) দুইজন রোহিঙ্গা নাগরিক উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে সংঘঠিত ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘কুতুপালং ক্যাম্পের ৮/৯ কিলোমিটার অদুরে জনমানবহীন নৌকার মাঠ এলাকাটি আল ইয়াকিন গ্রুপের নেতা ইসমাইল গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে ছিল। এক সময় সেখানে রোহিঙ্গা যুবকদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। তিন মাস আগে ইউনুছ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার সুযোগে নৌকার মাঠ এলাকা দখল দেয় আরসা গ্রুপের লিডার মার্স নামধারী এক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। গত এক মাস ইউনুছ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নৌকার মাঠ পুনুরুদ্ধারে চেষ্টা চালায়।

এ নিয়ে ইতিপূর্বে উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার রাত আড়াইটার দিকে আল ইয়াকিনের লিডার ইউনুছ গ্রুপ নৌকার মাঠটি দখলে নিতে গেলে দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয়।

কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সেনা সদস্যের সঙ্গে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে উচ্ছৃঙ্খল রোহিঙ্গারা তাদের লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এ সময় আত্বরক্ষার্থে পুলিশ ৭/৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে মারলে রোহিঙ্গারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থল থেকে সেনা সদস্য ও পুলিশ ১০ জন রোঙ্গিাকে আটক  করে।’

প্রতক্ষ্যদর্শী পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাত জানান ‘কালো হাফ প্যান্ট পরিহিত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা দা-কিরিজ নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল। মনে হচ্ছিল একটি রণক্ষেত্র।’

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, ‘আটক ১০ জন রোহিঙ্গাকে পুলিশ এসল্ট মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।’

আরো পড়ুনঃ মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবিবের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা

এ ঘটনা নিয়ে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গারা জানিয়েছে।

ইত্তেফাক/নূহু