শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

৪৬ বছরেও হয়নি কমরেড রূপনারায়ণ হত্যার বিচার

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০১৯, ০০:৫১

তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, ব্রিটিশ শাসন আমলের এমএলএ কমরেড রূপনারায়ণ রায়ের প্রয়াণ দিবস আগামীকাল ২৪ মার্চ। ১৯৭৩ সালের ২৪ মার্চ গভীর রাতে ৭৩ বছর বয়সী এই বর্ষীয়ান নেতাকে একদল দুর্বৃত্ত হত্যা করে। এর মধ্যে কেটে গেছে ৪৬টি বছর। আজও দিনাজপুরবাসী জানেনা কেন এবং কারা তাকে হত্যা করেছিল।

দেশে তখন জমিদারি এবং ব্রিটিশ শাসনের উৎপীড়ন চলছিল। সে সময় বিভিন্ন পর্যায়ে কৃষক-শ্রমিক-জনতার পক্ষে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন গড়ে ওঠে। তখন দিনাজপুরের ফুলবাড়ি এলাকায় গঠন করা হয় কৃষক সমিতি। কৃষক সমিতির অন্যতম ছিলেন কালী সরকার। পরবর্তীতে রূপনারায়ণ ও কালী সরকারের যৌথ নেতৃত্বে বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলে কৃষক আন্দোলন প্রাণ পায়। ১৯৩৯-৪০ সালে দিনাজপুর ও রংপুর জেলার বিভিন্ন হাটে তোলা বাটি আন্দোলন ছিল কৃষক সমিতির সফল আন্দোলন।
 
ফুলবাড়িসহ দিনাজপুরের কৃষকদের জমিদার-জোতদারদের বিরুদ্ধে যে সব আন্দোলন উল্লেখযোগ্য এবং এ অঞ্চলে যারা তেভাগা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে রূপনারায়ণ রায় অন্যতম। বিভিন্ন আন্দোলনে সাফল্য লাভ করার পর আসে ১৯৪৬ সালে নির্বাচন। এ নির্বাচনে সারা বাংলাদেশে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে যে কয়জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়লাভ করেছিলে রূপনারায়ণ তাদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম। 

এর পর হয় দেশ ভাগ। পাল্টে যায় রাজনীতির অঙ্গন। ১৯৭১ সালে জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। তখন কমরেড রূপনারায়ণের খোঁজ আর কেউ নিতেন না। শেষ বয়সে তিনি সংবাদপত্র বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এর  চেয়ে করুণ ইতিহাস হলো, ১৯৭৩ সালের ২৪ মার্চ গভীর রাতে একদল দুর্বৃত্ত তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ হত্যার কারণ এবং বিচার আজও পায়নি ফুলবাড়িবাসী।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের লালপুর গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন এই নেতা। ব্যক্তিজীবনে কমরেড রূপনারায়ণের ২ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। তার এক চিলতে বসতভিটায় বাস করেন বড় ছেলের পরিবার। ছোট ছেলে থাকেন ফুলবাড়ি উপজেলা এক গুচ্ছ গ্রামে। আর মেজো ছেলে থাকেন উপজেলার মাদিলা গোয়ালপাড়া গ্রামে। সবাই আজ বিচ্ছিন্ন।

আরো পড়ুন: মোদি বড়লোক ও চোরদের চৌকিদার: রাহুল

প্রতিবছর ২৪ মার্চ ফুলবাড়ি উপজেলা শাখা বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি স্বল্প পরিসের কমরেড রূপনারায়ণ রায়কে স্মরণ করেন। বাকিটুকু শুধু ইতিহাস। 

ইত্তেফাক/অনি