শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দুটি কবিতা

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:৫২

আমার ছিন্নপত্র

 

 ১.

পানিতে পা ডোবানো।

মেয়েটি ঘাটের শেষ সিঁড়িতে। 

পায়ের নূপুর স্রোতে কাঁপছে।

 

পদ্মার হিতব্রত ঢেউগুলিকে

বসে থাকার রূপরেখা

আঙুলের চিরুনিতে নাড়াচাড়া করে। 

ভিজে যায় ঝুঁকে পড়া চুল।

 

ছিপ ফেলে পাড়ের কিনারে এক বুড়ো

একশ বছরের ধৈর্য নিয়ে

ফাতনার ডুবে যাবার মুহূর্ত মাপছে।

অদূরে পানিকে থাপড়াতে থাপড়াতে

যাচ্ছে ইঞ্জিনের নৌকা।

আরো দূরে একটি ব্রিজের জন্যে

রাত্রিদিন শত শত মানুষ  

কর্মযজ্ঞের চুলোয় রান্না করছে স্বপ্ন। 

কচুরিপানার উপর বসে একটি নিঃসঙ্গ বক

যাচ্ছে সন্ধ্যার দার্শনিকতার দিকে।

 

ঘাটের উপরে একটি যুবক

হতে পারে মেয়েটির প্রেমিক।

জিন্সের ট্রাওজার পরা।

গায়ে লাল টি-শার্ট। পায়ে কেড্স।

স্মার্টফোনে মেয়েটির ছবি তুলছে।

ঠোঁটে হাসির মৃদু আনন্দে নৃত্যমান পড়ন্ত রৌদ্র।

 

দুজনের মাঝখানে

ঘাটের উপর ধাবমান ছায়া ফেলে

বাড়ি ফিরছে কয়টি শালিক।

 

২৬.১০.২০১৯

 

 

 

 

 

 

 

২.

সকালে পদ্মার চর।

বালির বিছানায় চমকে যাচ্ছে কাঁচা রোদ।

রাখাল পালের ভেতর একটি মহিষের পিঠে চড়ে

নাকি কালো মেঘের দুলন্ত পিঠে চড়ে

মোবাইলে গান শুনছে।

আরামের বাতাসে দুলছে লাল গামছা।

 

দড়মার বেড়া দেওয়া এনজিও’র স্কুলে

কিস্তি তোলার দিন।

লাল মোটরসাইকেলে

বালিতে চাকার আক্রোশি দাগ তুলে

যাচ্ছে একটি ব্যাংকের অফিসার।

খুব জরুরি মিটিং।

চারদিন হামিদ মাঝির খোঁজ নেই।

তার অনেক ঋণ।

তার একটি কালো ছাগল নিয়ে গেল ব্যাংক।

হামিদের ছোট মেয়ে

ছাগলটার পেছনে পেছনে

নদী পর্যন্ত দৌড়ায় আর কাঁদে।

 

তুমি এখানে আসলে চরের বালিতে হাঁটা যেত।

কাল পূর্ণিমা। নৌকায় ভ্রমণ হতো।

শাদাটে বালিতে শায়িত জোস্নার সমারোহে

ঢেউয়ের উপর চাঁদের ভাঙনে-গড়নে

তোমার চোখ বিস্ময়ে নতুন চেতনার আনন্দ পেত

অথবা আমাদের দূরত্বের কষ্ট।

 

২৮.১০.২০১৯

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন