শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিকলমুক্ত হলো সেই ৩ কিশোর

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১১:০৮

গাজীপুরের কালীগঞ্জের তুমলিয়া ইউনিয়নের ভাইয়াসূতি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী ইফাদ, ইয়াসিন ও আজিজুল। তিনজনেরই বয়সই ১৩ বছর। তাদের ২৪ ঘণ্টায় কাটতো লোহার শিকলে তালাবদ্ধ অবস্থায়। খাওয়া-দাওয়া, টয়লেট-গোসল, লেখাপড়া, ঘুম সবই চলছিল এই অবস্থায়। বিষয়টি শুরুতে নজরে আসে স্থানীয় উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের। পরে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সেই সংবাদগুলোই নজরে আসে ইউএনও মো. শিবলী সাদিকের।

 

ইউএনও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ভাইয়াসূতি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় যান। সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান এবং ওই মাদ্রাসার হেফজেখানায় অধ্যয়নরত কিশোর ইফাদ, ইয়াসিন ও আজিজুলের পায়ের তালাবদ্ধ লোহার শিকল মুক্ত করেন। পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটিকে সতর্ক করেন।

 

স্থানীয়রা বলেন, লোহার শিকলে তালায় অবরুদ্ধ শৈশব নয়। হাসি, খেলা আর আনন্দের ছলে হোক শিশুদের শিক্ষা জীবন। ভবিষ্যতে মানুষের মতো মানুষ হোক। কোনো শিক্ষকের নির্যাতনের শিক্ষা নিয়ে তারাও যেন ওই শিক্ষকদের মত না হয়ে যায়। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের যথাযথ আইনের আওতায় আনার দাবিও স্থানীয়দের।

 

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইউএনও মো. শিবলী সাদিক বলেন, আপনাদের এই ধরনের অনুসন্ধানি এবং সাহসী প্রতিবেদনের জন্য আমাদের কাজ করা সহজ হয়। বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক ও মাদ্রাসা পরিচালনা পর্যদের সাথে কথা বলেছি। সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকী দু’জন হলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-ই-জান্নাত ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত্ হোসেন। ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা প্রয়োজনীয় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেব।

 

ইত্তেফাক/এএম