শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও ইতিহাস বিকৃত করছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২২, ১৯:২৫

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির নেতৃবৃন্দ ইতিহাসকে বিকৃত করছে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও যারা ইতিহাস বিকৃত করছে তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। 
 
সোমবার (২৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকার ১৮ বছরে পদার্পণ উৎসবে শুভেচ্ছাদান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকরা চট্টগ্রামের কালুরঘাটে রবিবার বিএনপির সমাবেশ করতে চাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে সম্প্রচারমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন ‘কালুরঘাটে কী জন্য সমাবেশ-ইতিহাস বিকৃত করার জন্য?’ 

‘পুলিশের ভাষ্যমতে বিএনপি ষোলশহরে সমাবেশ ও ফুল দেওয়ার অনুমতি নিয়েছিলো, কালুরঘাটে সমাবেশের অনুমতি নেয়নি’ উল্লেখ করে  তিনি বলেন, ‘বিএনপির বেশিরভাগ সমাবেশেই গন্ডগোল হয়, গাড়ি ভাংচুর করে, আবার নিজেরাও মারামারি করে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান পুলিশের দায়িত্ব এবং বিনা অনুমতিতে সমাবেশ করা যায় না।’

ড. হাছান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকৃতপক্ষে সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিল। মানুষের বাধায় ফেরত এসছিলো। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ তাকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করানো হয়।’

‘আর মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের কর্মকাণ্ডে তখনকার পাকিস্তানি কর্নেল পরবর্তীতে যিনি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হয়েছিলেন, তিনি চিঠি লিখেছিলেন যে, তার কর্মকাণ্ডে পাকিস্তানিরা খুশি এবং তার স্ত্রী-পুত্র নিয়ে কোনো চিন্তা না করতে; অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে জিয়াউর রহমান ছিলো পাকিস্তানিদের গুপ্তচর’ বলেন তথ্যমন্ত্রী। 

এ সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ে বামজোটের ডাকা সোমবারের আধাদিবস হরতাল নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ঢাকাসহ সারাদেশে বামজোটের হরতালে ঢাকা শহরে যানবাহনের প্রচণ্ড জ্যাম। যারা হরতাল ডেকেছে তাদের লজ্জা হচ্ছে কি না জানি না, তাদের জন্য বরং আমারই লজ্জা লাগছে যে হরতালে জনগণ বিন্দুমাত্র সাড়া দেয়নি। আর জাফরুল্লাহ সাহেবও হরতাল ডেকেছিলেন, তবে হরতাল ডেকে লন্ডন চলে গেছেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ ও করোনার কারণে সারা পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে এবং দেশেও আমদানিনির্ভর কিছু পণ্যের মূল্য বেড়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকার স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে যেভাবে কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করার ব্যবস্থা করেছেন, এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন, তাতে জনগণের মধ্যে স্বস্তি নেমে এসেছে। যে সমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীকে বিএনপি ভেতরে ভেতরে তাল দিয়েছিলো, তারাও প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগের কারণে তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পারেনি।’

‘কিন্তু এই প্রেক্ষাপটে বাম ভাইয়েরা যারা মুক্তিযুদ্ধে পক্ষে বলে, তাদেরকে আমি সম্মান জানাই তারা কেন এই হরতালটা ডেকে নিজেদেরকে হাস্যকর করলেন-সেটিই আমার প্রশ্ন’ উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান। 

অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘ভোগ্যপণ্য পর্যাপ্ত মজুদ আছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন সবচেয়ে বেশি চাল মজুদ আছে এবং সমস্ত ভোগ্যপণ্য রমজানের চাহিদার চেয়ে বেশি মজুদ আছে। কেউ যদি অহেতুক দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ 

এর আগে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার জন্য শুভেচ্ছা বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দৈনিক আমাদের সময় শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে ১৭ বছর ধরে সমাজের চিত্র পরিস্ফুটনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। আগামীতেও পত্রিকাটি সমাজের বলিষ্ঠ দর্পণ হিসেবেই কাজ করবে, এটিই আমার প্রত্যাশা।’

ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহা. নূর আলী, দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রকাশক এস. এম. বকস কল্লোল, সম্পাদক  মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার, সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে নিয়ে এ সময় পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন ড. হাছান মাহমুদ।

ইত্তেফাক/এএএম