যথাযথ মর্যাদায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করেছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট। বাঙালির জাতীয় জীবনে এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম পূর্ণতায় ১০ জানুয়ারি একটি ঐতিহাসিক দিন। তাৎপর্যপূর্ণ এ দিবসটিতে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা।
তিনি বলেন, টানা তৃতীয়বারের মত দেশ পরিচালনার দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দেশের আপামর জনসাধারণের গভীর আস্থা ও অকৃত্রিম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। জাতির পিতার সুযোগ্যা কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
উন্নয়নের এই অভিযাত্রায় দেশের কল্যাণে একযোগে কাজ করার জন্য এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ব্রতী হয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় জনকল্যাণমূলক কনস্যুলার সেবা প্রদানের জন্য কনসাল জেনারেল কনস্যুলেটের সকল সদস্যদের আহ্বান জানান তিনি।
জাতির পিতা, তার পরিবারের অন্যান্য শহীদ সদস্য ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে সুদীর্ঘ সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, পাকিস্তানী সরকার গ্রেফতার করার আগে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণা, গ্রেফতার করে বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যাওয়া এবং কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে পুনরায় ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করার ইতিহাস তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন: সিরিয়া থেকে অস্ত্র প্রত্যাহার শুরু আমেরিকার
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর যে বিজয় অর্জন করেছিল, সে বিজয়ের আনন্দ পূর্ণতা পেয়েছিল ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতাকে তার স্বপ্নের বাংলাদেশে ফিরে পেয়ে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪র্থ বারের মতো গঠিত সরকারের সুদূরপ্রসারী রূপকল্পসমূহের কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অদম্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে পারবো।
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও কূটনৈতিক প্রজ্ঞার আলোকে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে আরও নেতৃত্বশীল ও গঠনমূলক ভূমিকা রেখে পররাষ্ট্র খাতে ‘শেখ হাসিনা সরকার’ এর ইপ্সিত সাফল্য তুলে আনতে পারবে বলে রাষ্ট্রদূত মাসুদ তার প্রত্যাশার কথা জানান।
স্থায়ী প্রতিনিধির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় মিশনের উপস্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম, ইকোনমিক মিনিস্টার ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার খান ফিরোজ আহমেদ এফডব্লিউসি, পিএসসি, মিনিস্টার পলিটিক্যাল মনোয়ার হোসেনসহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন মিশনের হেড অফ চ্যান্সারি নিরুপম দেবনাথ।
ইত্তেফাক/বিএএফ