শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

তুরস্কে বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন

আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:৩১

দিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠান ও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে তুরস্কে ১৫ আগস্ট ২০১৯ জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা হয়।

১৫ আগস্ট ২০১৯ পূর্বাহ্নে রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দীকী কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অতঃপর দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করেন।

শোক দিবসের সকালের কর্মসূচীতে বাংলাদেশ দূতাবাস তুর্কী রেড ক্রিসেন্ট (তুর্ক কিজলেই) এর সহযোগিতায় আঙ্কারায় বসবাসরত ১০০টি দুস্থ সিরিয়ান শরণার্থী পরিবারের মধ্যে খাদ্য-সামগ্রী বিতরণ করে। 

এসময় তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব এম. আল্লামা সিদ্দীকী এবং তুর্কী রেড ক্রিসেন্ট, আঙ্কারা শাখার প্রেসিডেন্ট ঐধসফর ঝরপধশ (হাম্ধসঢ়;দি সিজাক) সহ দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত কর্মসূচী তুর্কী রেড ক্রিসেন্ট এর সামাজিক প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে হতে প্রতি বছর দূতাবাস জাতীয় শোক দিবসে সিরীয় শরনার্থীদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী
আয়োজন করে আসছে।

শোক দিবস উপলক্ষে অপরাহ্নে, দূতাবাসের পক্ষ থেকে আংকারাস্থ স্থানীয় একটি হোটেল এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা পর্বের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাত্রে সংঘটিত বিয়োগান্তুক ঘটনায় সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

দূতাবাসের কর্মর্কতা/কর্মচারী এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতিতে উক্ত দিবস উপলক্ষে প্রাপ্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয়। এসময় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও অর্জনের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

১৫ আগস্টের বিয়োগান্তুক ঘটনার প্রতি আলোকপাত করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাঙ্গালী জাতির কল্যাণে ও তাদের অধিকার নিশ্চিতকল্পে বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন।

এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধু বাঙ্গালী জাতিকে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত করে শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাই  এনে দেননি বরং স্বপ্নের “সোনার বাংলা” বিনির্মাণে এবং বাঙ্গালী জাতির মূল্যবোধ, আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। 

তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের “সোনার বাংলা” গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে  আসার  আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকারীরা বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনাকে বাংলাদেশের আপামর জনতার মন থেকে যেমন মুছে ফেলতে
পারেনি তেমনিভাবে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতিকে বাধাগ্রস্থ করতে পারেনি।

ফলশ্রতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ আজ একটি সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এখন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের কারনে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর জন্য রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

উক্ত আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আঙ্কারাস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা (ঋঅঙ) -এ কর্মরত বাংলাদেশী কর্মকর্তা শেখ আহাদুজ্জামান। 

এছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর উপর লিখিত প্রবন্ধ ও কবিতা পাঠ করা হয়। পরিশেষে, শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত এর মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

ইত্তেফাক/এসআর