লন্ডনে অনুষ্ঠিত হলো ১০ম বার্ষিক ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড শীর্ষ সম্মেলন। প্রতি বছর পৃথিবীর ১৯০টির বেশি দেশ থেকে দুই হাজারের অধিক তরুণ-তরুণী ও চেঞ্জ মেকার এ সম্মেলনে সমবেত হন। এখানে তরুণ নেতৃবৃন্দ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষে সমগ্র পৃথিবী থেকে আগত বিশ্ববিশ্রুত উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা ও তাদের পরামর্শ গ্রহণ করেন। নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এ বছরও উপদেষ্টা হিসেবে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।
লন্ডনের বিখ্যাত রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে ২২ অক্টোবর সম্মেলন আরম্ভ হয়। এতে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল সম্মানিত অতিথি হিসেবে সামিটে অংশ নেন। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, আয়ারল্যান্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মেরী রবিনসন, বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ ও সমাজকর্মী বব গেলডফ।
মূল সম্মেলন পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ওয়েস্টমিনিস্টার সেন্ট্রাল হলে। প্রফেসর ইউনূস ‘দারিদ্র বিমোচন: উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডের দ্বারা অর্থনৈতিক অসমতা দুর করা কি সম্ভব?’ শীর্ষক একটি প্লেনারি সেশনে ভাষণ দেন। প্রখ্যাত ব্রিটিশ ঔপনাস্যিক জে. কে. রলিং সামিটের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে মূল ভাষণ দেন।
ইউনূস তরুণদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে পরামর্শ দিয়ে বলেন, চাকরি মানুষের সৃষ্টিশীলতাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলে। পৃথিবী বর্তমানে যে জলবায়ু বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা থেকে তরুণ সমাজই বিশ্বকে রক্ষা করতে পারে। তরুণরা যদি এ বিষয়ে এখনই তৎপর না হয় তাহলে এই পৃথিবী অচিরেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
সম্মেলনে প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে অংশ নেয় ১০ সদস্যের এক তরুণ প্রতিনিধিদল। ইউনূস সেন্টার কর্তৃক একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই অংশগ্রহণকারীদের বাছাই করা হয়।
এছাড়া প্রফেসর ইউনূস দ্বিতীয় কুইন এলিজাবেথ হলে একটি বিশেষ প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে ক্ষুদ্রঋণ, সামাজিক ব্যবসা এবং সামাজিক ব্যবসা গড়ে তুলতে কী কী বাস্তব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: তিনি ‘পেশাদার প্রেমিক’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন, নরওয়ের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গ্রো হারলেম ব্রান্ড্টল্যান্ড, কলম্বিয়ার ফার্স্ট লেডি মারিয়া জুলিয়ানা রুইজ, জাতি সংঘের প্রাক্তন আন্ডার সেক্রেটারি মাইকেল মোলার, ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্যার জন মেজর, বিশিষ্ট পরিবেশ বিদ ড. জেন গুডঅল, পাঁচ বারের প্যারালিম্পিক চ্যাম্পিয়ন এলি সিমন্ডস এবং টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিজ স্টোন।
সমাপনী সেশনে প্রফেসর ইউনূসকে আগামী বছরের ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড সামিটের ভেন্যু হিসেবে মিউনিখের নাম ঘোষণা করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একই সঙ্গে প্রফেসর ইউনূস মিউনিখের ডেপুটি মেয়র ম্যানুয়েল প্রিটজলকে তার স্বাগত ভাষণ দিতে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান এবং শেষে এ বছরের ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড সামিটের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ইত্তেফাক/এসি