শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কাঠমাণ্ডুতে পরিষ্কার অভিযানে বাংলাদেশ

আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৪

কাঠমাণ্ডুর বাগমতি নদীর তীর থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অ্যাকসেস কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ইংরেজি ভাষা শিক্ষা প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া ছয়টি দেশের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষক এবং কাঠমাণ্ডুর নাগরিক সংগঠনগুলোর ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক। এটি ছিল ‘বাগমতি পরিষ্কার’ অভিযানের টানা ৩৪০তম সপ্তাহ।

১৪০ জনের বেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষক এবং কাঠমাণ্ডুর নাগরিক সংগঠনগুলোর ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক গত ১৯ নভেম্বর অংশ নেন বাগমতি নদীর তীর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে। চীনে নিযুক্ত নেপালি রাষ্ট্রদূত লীলামনি পওডেল এবং নেপালের নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ‘বাগমতি পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি’ এ উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যার লক্ষ্য, নদীর বাস্তুসংস্থান সুষ্ঠু রাখতে সহায়তা করা।

পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা উৎসাহের সঙ্গে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। বাগমতি নদীর তীর থেকে কয়েক হাজার কিলোগ্রাম আবর্জনা সরিয়েছেন তারা। অনুষ্ঠানের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের প্রশংসা করা হয়। স্থানীয় ঘটনা হলেও, বৈশ্বিক তাৎপর্য রয়েছে এমন একটি ইস্যুতে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান রাখায় তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেপালে এসেছিলেন এই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ওই কর্মসূচির আওতায় স্থানীয়দের প্রয়োজনভিত্তিক প্রকল্প তৈরি ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি মিডিয়া সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এমন একটি কমিউনিটি গড়ে তোলা, যা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা তাদের অ্যালামনাইদের ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে।

‘বাগমতি পরিষ্কার’ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া ভারতীয় একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, 'এটি আমাকে একজোট হয়ে কাজ করার গুরুত্ব শিখিয়েছে। এটি আরও শিখিয়েছে চিরকালের সেরা শিক্ষাটা- তুমি বিশ্বে যে পরিবর্তন দেখতে চাও তাতে নিজেও অংশ নাও।”

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা এসেছিলেন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা থেকে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কর্মসূচি ইংলিশ অ্যাকসেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত। নেপালে সাতদিনের এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পৃষ্ঠপোষকাধীন বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে সেরা করণীয় বিষয়গুলো পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা এবং কার্যকর কমিউনিটি সার্ভিস কর্মসূচি গড়ে তোলার ব্যাপারেও নির্দেশনা দেন।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পরও নেপালে গড়ে ওঠা ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিজেদের কার্যক্রম পরষ্পরের সঙ্গে শেয়ার করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে পারবেন।

কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া পাকিস্তানি একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, 'আমি নিজে একা এ ধরণের কিছু কাজ করে আসছিলাম। তবে ঠিক এভাবে না, অন্যদের সঙ্গে মিলে না। এখানে আমরা অভিন্ন কমিউনিটি থেকে আসা একটি বৈচিত্রপূর্ণ গ্রুপ। আমরা  #এডুকেশনফরঅল (লেখাপড়া সবার জন্য ) কর্মসূচিতে কাজ করতে সবাই একত্রিত হয়েছি।' আরেকজন অংশগ্রহণকারীর মন্তব্য করেন, 'আন্তঃসাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময়ের এক উন্মুক্ত ও নিরাপদ পরিসর যুগিয়েছে এ সম্মেলনটি।'

ইংলিশ অ্যাকসেস মাইক্রো স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় আর্থিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠীর মেধাবী তরুণদের ইংরেজি ভাষার বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে তরুণদের জন্য দুবছর ধরে স্কুলের পর ক্লাস নেওয়া ও নিবিড় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এটি তরুণদের ভবিষ্যতের পড়াশোনা ও চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রচেষ্টার অংশ।'
২০০৪ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে ইংলিশ অ্যাকসেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামে ৮৫টির বেশি দেশের এক লাখ ২৫ হাজারের মতো শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে যারা দেশের চারটি স্থানে এ প্রশিক্ষণ পেয়েছে।

ইত্তেফাক/নূহু