বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘আমাদেরও তো অভিমান আছে’

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৪:৩৯

ইতিহাস নির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন অরুণা বিশ্বাস। সম্প্রতি কানাডা থেকে দেশে ফিরেছেন এই বরেণ্য অভিনেত্রী। নিজের কাজ ও পরিকল্পনা নিয়ে কথা বললেন বিনোদন প্রতিদিনের সঙ্গে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন তানভীর তারেক
 
এ সময়ে দেশে ফিরলেন?

দেশে করোনার গভীর সঙ্কটের সময়ে কানাডা গিয়েছিলাম, ছেলেকে দেখার জন্য। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই চলে এসেছি। যেহেতু সেন্সর বোর্ডের জুরিসহ একাধিক কাজের দায়িত্বে রয়েছি, তাই দেশ ছেড়ে যাবো কই?

চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রস্তুতি কতটুকু?

অনেকখানি এগিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ আর এই দেশ-বিভাগের বিভিন্ন অনুসঙ্গ নিয়ে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যা নিয়ে কাজ হয় না আমাদের। তেমনই একটি গল্প বাঁধার চেষ্টা করছি। এ বছরেই কাজ শুরু করবো।

সেন্সর বোর্ডের জুরি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে একজন চলচ্চিত্রকর্মী হিসেবে আপনার এ সময়ের চলচ্চিত্র নিয়ে মূল্যায়ন কী?

দেখুন, অনেকেই অনেকরকম কথা বলছেন। সিনেমার তারকারা বলছেন গল্প সঙ্কট। আবার গল্পকাররা বলছেন তাদের পারিশ্রমিকের অনেক ফারাক। আমি এর আগেও একাধিক জায়গায় বলেছি। আজও বলবো, একজন স্ক্রিপ্ট রাইটারের গল্পের ওপরেই পুরো সিনেমা দাঁড়ায়। সেখানে তার পারিশ্রমিক যদি নগণ্য হয়, সেখান থেকেই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। আসলে পুরো আয়োজনকে যিনি বাঁধবেন সেই মানের প্রডাকশন হাউজ কই? আগে তো অনেকগুলো অফিস ছিল প্রযোজকদের। বড় বড় হাউজের নাম জানতেন সবাই। আপনি এখন একটা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে পারবেন? শিল্পীরা সেখানে বসে আড্ডা দিতেন, নয়তো সিনেমার গল্প শুনতেন। এখন সব মৌসুমি প্রযোজক। তারা হঠাত্ করে একটি দুটি ছবি করে আবার উধাও। আগের ব্যবসায় ফিরে গেছে। এটা যেন তাদের সাময়িক ফূর্তির জায়গা। যতদিন ব্যবসায়িক মনোভাব না থাকবে, প্রযোজকদের দোকান না বসবে ততদিন শৃঙ্খলা ফিরবে না। তাই আমি যখন ছবি দেখি, সেই ব্যাপারটি স্পষ্ট দেখতে পাই। কোথায় যেন খাপছাড়া সবকিছু। একটা সুতোই বাঁধা নেই ছবির গল্প কিংবা গান।

আপনারা যারা সিনিয়র আছেন তাদের ভেতরেও বৈষম্য বা একতার অভাবের কথা বলেন অনেকেই। অনেকেই বলেন, চলচ্চিত্রের এখনকার সাংগঠনিক সঙ্কটকে আপনারা সবাই মিলে মিটিয়ে ফেলতে পারেন—

অবশ্যই পারি। কিন্তু আজ তো রাজ্জাক ভাই নেই। যিনি সবাইকে এক ডাকে এক করবেন। আর এই অশ্রদ্ধার গল্প তো একদিনে তৈরিও হয়নি। ছবি থেকে নায়কের বাবা-মা চরিত্রে বড়মাপের কোনো অভিনয় শিল্পী নেই। তাই সিনিয়রদের যাতায়াত কমে গেছে। আপনাকেই প্রশ্ন করি, আচ্ছা চিত্রনায়ক ওয়াসিম আজও আছেন। কোনো ছবিতে শাকিবের বাবা হিসেবে তাকে আনেন না। পর্দায় সবাই তখন এই দু’জনের কেমিস্ট্রি দেখার জন্য হা করে চেয়ে থাকবে। আমার কথা বাদ দিলাম। সুচরিতা, ববিতা আপারা রেগুলার কাস্টিং হয় না কত বছর? আপনাদের হিসেব আছে জানা? তাই সিনিয়ররা কোন হিসেবে এই তর্ক বাহাসের ভেতরে আসতে চাইবে। আমাদেরও তো অভিমান আছে?

নতুন ছবির বাইরে আপনার প্রডাকশন হাউজের ব্যানারে কী কাজ করছেন?

রেগুলার কিছু কাজ করবো। ওয়েব সিরিজ, ডকুফিকশন। সেকারণেই দেশে আসা। কারণ আমি মনে করি সাংস্কৃতিক চর্চার ভেতর দিয়েই সামাজিক এসব সঙ্কট অসঙ্গতি দূর করা সম্ভব। একজন চলচ্চিত্রকর্মী হিসেবে এটাকে আমার দায়িত্বও মনে করি।

ইত্তেফাক/বিএএফ