শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাংলাদেশের সাথে ফ্লাইট বন্ধের সময়সীমা আবারো বাড়াচ্ছে ইতালি

আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২০, ১০:৫৭

মহামারী করোনার দ্বিতীয় প্রকোপ ঠেকাতে বাংলাদেশসহ আরো ১৬ টি দেশের সাথে ইতালির সকল ফ্লাইট বন্ধের সময়সীমা আবারো বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। তবে দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করে নতুনকরে লকডাউনে যেতে চাচ্ছে না দেশটি।

জানা যায়, নতুন করে দেশটিতে আবারো করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশসহ মোট ১৬ টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সাথে ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ দিন বাড়িয়ে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ায় দেশটির সরকার। তবে বর্তমানে দেশটিতে আবারো করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ নিষেধাজ্ঞা আরো এক সপ্তাহ অর্থাৎ ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া জরুরী অবস্থার মেয়াদ পরবর্তী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কন্তে প্রশাসন। মঙ্গলবার দেশটির স্বনামধন্য পত্রিকা ‘ইল মেসাজ্জেরো’ এমন খবর প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ১৭ টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সাথে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দেয় ইতালি সরকার। পরে পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে একটি দেশ কমিয়ে বাংলাদেশসহ মোট ১৬ টি দেশের সাথে ফ্লাইট বন্ধের সময়সীমা ১০ আগস্ট থেকে বাড়িয়ে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় তা আরো একদফা বাড়িয়ে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। তবে বর্তমানে দেশটিতে আবারো নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলমান নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত করেছে ইতালি সরকার। এছাড়া নতুন করে ঝুঁকি এড়াতে জরুরী অবস্থার মেয়াদ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কন্তে সরকার। এছাড়াও দেশটিতে বসবাসরত সকল নাগরিকদের জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

চলতি মাসের শেষদিন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশগুলি হচ্ছে- আরমানিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, বসনিয়া, চিলি, কলম্বিয়া, কুয়েত, উত্তর মাচেদোনিয়া, মলদোভা, ওমান, পানামা, পেরু, রিপাবলিক ডোমেনিকান, কসভো ও মন্তেনেগ্রো। তবে এ তালিকায় কিছুদিন সার্বিয়ার নাম থাকলেও বর্তমানে দেশটির করোনা পরিস্থিতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য সার্বিয়াকে নিষেধাজ্ঞার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে কন্তে প্রশাসন।

এভাবে বারবার ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশে আটকে পড়া ইতালি প্রবাসীরা। এতে অনেকেই সময়মত কর্মস্থলে যোগ দিতে না পারায় চাকরি হারাচ্ছেন। এছাড়াও অনেক ব্যবসায়ী দেশে আটকে থাকায় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে হুমকির মুখে।

এবিষয়ে দেশে আটকে পড়া প্রবাসী ব্যবসায়ী হৃদয় মুঠোফোনে বলেন, ‘প্রায় ৯ মাস যাবত দেশে আটকে আছি। ফ্লাইট বন্ধের কারণে ফিরতে না পারায় আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়মাস যাবত বন্ধ রয়েছে। তবে বছর শেষে আমাকে দোকান ভাড়া ঠিকই পরিশোধ করতে হবে। এভাবে ব্যবসা না করে আমি কিভাবে ভাড়া পরিশোধ করব। শেষে হয়তো আমাকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। তবে আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করে বলতে চাই, দেশের রেমিটেন্সের কথা চিন্তা করে যতদ্রুত সম্ভব ইতালির সরকারের সাথে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করা হোক’।

এদিকে, দেশটিতে আবারো বেড়েছে নতুন করোনা রোগীর সংখ্যা। সরকারী হিসেবে মঙ্গলবার দেশটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৭৭ জন করোনা রোগী। এছাড়াও গত চব্বিশ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ জন। তবে মঙ্গলবার সারাদেশে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪১৮ জন। এনিয়ে দেশটিতে সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৯ জন করোনা রোগী। তবে এখনো এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬০ হাজার ১৩৪ জন। যারমধ্যে ৩১৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইত্তেফাক/এমআর