শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা-অংশীদারিত্ব: রাবাব ফাতিমা

আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ১৫:০৩

দক্ষতার সঙ্গে এবং কার্যকর ও সমন্বিতভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানালেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। শনিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে ‘মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ উত্থাপিত জাতিসংঘের বার্ষিক রিপোর্ট এবং ২০২১ সালের অগ্রাধিকারসমূহ’-এর উপর আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।

জাতিসংঘের সার্বিক কর্মকাণ্ডের উপর করোনার তীব্র চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জাতিসংঘকে সচল রাখার জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এ সময় করোনার টিকা নিশ্চিত করা, জরুরি জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবিলা, এলডিসি ক্যাটেগরি থেকে উত্তরণ, এজেন্ডা-২০৩০ এর বাস্তবায়ন, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, শান্তিরক্ষা ও রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলার মতো বাংলাদেশের জাতীয় অগ্রাধিকারসমূহের কথা তুলে ধরেন তিনি।

আরও পড়ুন: কানাডার ম্যানিটোবার নদীতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ

করোনা সঙ্কট কাটিয়ে পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অংশীদারিত্ব ও সংহতি গড়ে তোলার গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কার্যকর সাড়াদান ও পুনরুদ্ধারে অবশ্যই অগ্রাধিকারভিত্তিতে সকলের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন দেশ ও জাতিসমূহের মধ্যে আসন্ন ‘টিকা বৈষম্য’ কাটিয়ে তুলতে প্রয়োজন ন্যায়সঙ্গত, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মূল্যের করোনার টিকার বিশ্বব্যাপী প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা যার নেতৃত্ব দিতে পারে জাতিসংঘ। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, টিকার উৎপাদন পর্যায়ে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিতরণের ক্ষেত্রেও একইরকম গুরুত্ব দিতে হবে।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, উত্তরণের পথে থাকা এবং উত্তরিত দেশগুলোর জন্য সময়সীমা-ভিত্তিক সহযোগিতার পদক্ষেপসমূহ এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য প্রণোদনাভিত্তিক উত্তরণ-পথ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। যদি তা না করা হয়, তবে করোনার নেতিবাচক পরিস্থিতিসহ বিদ্যমান নাজুক পরিস্থিতির কারণে এ সকল দেশের কষ্টার্জিত উন্নয়ন-অর্জন মারাত্বকভাবে হুমকির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন: কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি চালুর উদ্যোগ

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি পদক্ষেপ এবং এগুলো অর্জনে নারী ও যুবদের উপর বিশেষভাবে মনোনিবেশ প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পূনর্ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। কোভিড-১৯ সত্ত্বেও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ অন্যান্য ফ্রন্টলাইন কর্মীগণ বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা প্রচেষ্টায় অব্যাহত ও নিবেদিতভাবে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি। ভবিষ্যৎ মহামারি বা এ ধরনের যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় শান্তিরক্ষা ম্যান্ডেট অনুযায়ী অবশ্যই প্রয়োজনীয় পূর্বপ্রস্তুতি নিশ্চিত করা উচিত মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

প্রথাগতভাবে প্রতিবছরের শুরুতে জাতিসংঘ মহাসচিব একটি অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিং-এর মাধ্যমে জাতিসংঘের অগ্রাধিকারসমূহের কথা তুলে ধরেন। এবছর জাতিসংঘের অগ্রাধিকারসমূহ হলো, করোনার টিকার সুষ্ঠু ও সমবন্টন এবং বিশ্বস্বাস্থ্য ব্যবস্থা রক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য, দারিদ্র্য ও অসমতা মোকাবিলা, মানবাধিকার, লিঙ্গ সমতা, শান্তি ও নিরাপত্তাহীনতা রোধ, পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণ, ডিজিটাল প্রযুক্তির বিপদজনক দিকসমূহ প্রতিরোধ করা এবং সার্বজনীন বিশ্ব-ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধি ও প্রতিনিধিগণ মহাসচিবের এই ব্রিফিং অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি