স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি একাত্তরের গণহত্যা

ঠিক পাঁচ দশক আগে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সংঘটিত একটি ভয়াবহ গণহত্যা এই গণহত্যা আজও বিশ্বের ইতিহাসে স্থান পায়নি। পায়নি তার স্বীকৃতি। আর তাই আন্তর্জাতিক মহলে এত বড় হত্যাকান্ড-অনুচ্চারিতই থেকে যায়।
একাত্তরের-গণহত্যা-নির্যাতন সংরক্ষণাগার ও জাদুঘর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক মুনতাসির মামুন মঙ্গলবার (২ মার্চ) ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক কাউন্সিল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, নয় মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।
বাংলাদেশ নামের একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। এত অল্প সময়ে এত মানুষ হত্যা করার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের হলোকাস্টে প্রায় ৫ বছরে ৬ মিলিয়ন ইহুদী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে নিহত মানুষের সংখ্যার আনুপাতিক হার হিসাব করলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা হলোকাস্টকেও হার মানায়। পাকিস্তানের এত বড় অপরাধ বিশ্বের অজানাই থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের এই অন্ধকার কাল যেন ভুলে না যায় এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, নীতি ও জাতীয় চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে এই একাত্তরের গণহত্যা জাদুঘর ও সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানগুলি বাংলাদেশের ইতিহাসের দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্মরণে অনুষ্ঠিত নিয়েছিল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশতম বার্ষিকী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালন নিয়ে।
ওআরএফ এর এই ইভেন্টে, গণহত্যার উপর তিনটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। সব গুলো চলচিত্রই ছিল পাকিস্তানের গণহত্যা এবং তৎকালীন পাকিস্তানী বাহিনী দ্বারা বাঙ্গালীদের ওপর চালানো অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের নৈরাজ্যকে কেন্দ্র করে। আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনটি কেবল বাংলাদেশের মুক্তির চেতনা মুক্তি নয়, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার গুরুত্বকেও জানান দিচ্ছে।
ইত্তেফাক/এএইচপি